প্রতিবারের ন্যায় এবারও প্রথম রাউন্ড দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। তবে গেল আসরগুলোর চেয়ে এবার বেশ পরিণত ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। টাইগারদের বর্তমান পারফরম্যান্স বিবেচনায় এবারের দলকে ‘আন্ডারডগ’ বলছে না আইসিসি। পুরো স্কোয়াড নিয়ে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির বিশ্লেষণে উঠে আসে তরুণদের নির্ভরতা ও বাংলাদেশ দলের শক্তির দিকগুলো।
করোনার পরবর্তীতে ক্রিকেট ফেরার পর সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জেতা দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে চলতি বছরে ৯ ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা। যেখানে উপরে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ১২ ম্যাচ। জিম্বাবুয়ের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ জেতার পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ও নিউজিল্যান্ডকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে দুর্দান্ত ফর্মে বাংলাদেশ। টানা তিন সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্ব মঞ্চে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত মাহমুদউল্লাহর দল।
বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে বাংলাদেশের জয় একমাত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তাও ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে। এরপর থেকে আর কোনো বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে জেতা হয়নি বাংলাদেশের। এবার তরুণ নির্ভর দল নিয়ে সেই আক্ষেপ গুছানোর সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে টাইগারদের। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতা অধিনায়কের রেকর্ড গড়েছেন কিছুদিন হলো। এ ছাড়াও দলে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকাররা। তামিম ইকবাল না থাকায় ওপেনিংয়ে দলের ভরসা হতে পারেন লিটন দাস ও নাঈম শেখ।
এই দলের নতুনদের মধ্যে নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদী হাসান, শরিফুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদও পারফরম্যান্স দিয়ে নজর কেড়েছেন। তবে আইসিসির মতে দলের তুরুপের তাস হতে পারেন আফিফ হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান।
২০১৮ সালে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন আফিফ হোসেন। কিন্তু পারফরম্যান্স করতে না পারায় দলে সুযোগ হারান তিনি। তবে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। একই বছরের শেষের দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক ইনিংসে দলকে জিতিয়ে আবার দলে নিয়মিত হন তিনি। ক্যারিয়ারে মাত্র একটি অর্ধশতক করলেও চলতি বছরে দারুণ ফর্মে আছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ২৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২৩ ইনিংসে ১৮ দশমিক ৬৪ গড়ে আফিফের সংগ্রহ ৩৭৩ রান। বল হাতে শিকার করেছেন ৭টি উইকেট। আসন্ন বিশ্বকাপে এই অলরাউন্ডার ভালো করবে বলে প্রত্যাশা আইসিসির।
আইসিসির চোখে বাংলাদেশের কী প্লেয়ার মুস্তাফিজুর রহমান। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকেই মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন তিনি। মাঝের কিছু সময় চোট কাটিয়ে আবার সেই আগের জায়গায় ফিরেছেন তিনি, তাতেই স্বস্তি মিলেছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশনে। ২০২০ সাল থেকে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন মুস্তাফিজ। এই তালিকায় সারাবিশ্বে তার অবস্থান ১১তম। আইসিসি বোলিং র্যাংকিংয়েও আছেন সেরা দশে।
সর্বশেষ ১৫টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুস্তাফিজ ৬.৪৯ ইকোনমি ও ১৪.৭০ গড়ে শিকার করেছেন ২৪টি উইকেট। সম্প্রতি রাজস্থান রয়্যালসের পক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভালো খেলেছেন এই বাংলাদেশি তারকা। ১৪ ম্যাচে শিকার করেছেন ১৪টি উইকেট। আছে ম্যাচজয়ী পারফরম্যান্সও। ফর্মে থাকা মুস্তাফিজ তাই নিঃসন্দেহেই বাংলাদেশের শক্তির সবচেয়ে বড় একটি খুঁটি।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড :
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), নাঈম শেখ, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আফিফ হোসেন ধ্রুব, সৌম্য সরকার, শেখ মেহেদী হাসান, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), নাসুম আহমেদ, শামীম হোসেন পাটোয়ারি, রুবেল হোসেন (স্ট্যান্ডবাই)।
প্রথম পর্বে বাংলাদেশের ম্যাচের তারিখ – ম্যাচ – ভেন্যু – সময় (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী)
১৭ অক্টোবর – বাংলাদেশ বনাম স্কটল্যান্ড – ওমান – রাত ৮টা
১৯ অক্টোবর – বাংলাদেশ বনাম ওমান – ওমান – রাত ৮টা
২১ অক্টোবর – বাংলাদেশ বনাম পাপুয়া নিউগিনি – ওমান – বিকাল ৪টা