জাতীয়

আরমানিটোলায় অগ্নিদগ্ধ নবদম্পতি লাইফ সাপোর্টে

(Last Updated On: )

পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডে আহত নবদম্পতি মুনা সরকার ও আশিকুজ্জামান খানের জ্ঞান ফেরেনি। আজ শনিবার তাদের হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে আরমানিটোলার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জ্ঞান হারান তারা।

দুজনই এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দুজনের শরীরের ভেতরই ধোঁয়া প্রবেশ করে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্বাসনালী। আইসিইউতে থাকা দুজনের জ্ঞান থাকলেও অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। মুনা সরকার ও তার স্বামী আশিকুজ্জামান খানের বিয়ে হয়েছে মাত্র দেড় মাস আগে। মুনা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর আশিকুজ্জামান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র।

অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে এখন পর্যন্ত নিজের বড় ভাইকে দেখেননি আশিকুজ্জামানের ছোট ভাই সালমান ফারসি। সালমান আজ শনিবার সকালে বলেন, ‘চিকিৎসকেরা বলেছেন, ৭২ ঘণ্টার ভেতর জ্ঞান না ফিরলে কিছু করার নেই।’ এদিকে ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন আজ সকালে বলেন, ‘এখন আসলে করণীয় নেই। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’

নবদম্পতি মুনা ও আশিকুজ্জামানকে নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটেনি মুনার বাবা ইব্রাহিম সরকারের। আগুন বড় মেয়ে ও মেয়ের জামাই আছেন লাইফ সাপোর্টে, ছোট মেয়ে সুমাইয়া সরকার গতকালই (২০) মারা গেছেন। আগুন রেহাই দেয়নি ইব্রাহিমের ছয় সদস্যের পরিবারের কাউকেই। স্ত্রী সুফিয়া সরকার ও ছেলে জুনায়েদ সরকারও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তি হয়েছেন ইব্রাহিম সরকার নিজেও।

বিদায়বেলায় ছোট মেয়েকে দেখতে পারেননি ইব্রাহিম সরকারের পরিবারের কেউ। গতকাল রাতে তাকে দাফন করা হয়েছে সোনারগাঁয়ে গ্রামের বাড়িতে। সুমাইয়া ইডেন মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

এদিকে আশিকুজ্জামানের বাবা আবুল কাশেম খান বলেন, ‘এক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। খালার বাসায় থেকে লেখাপড়া করে আশিকুজ্জামান। শ্বশুরের বাসায় এসেছিল বুধবার রাতে। নিচে কেমিক্যালের (রাসায়নিক) গুদামে আগুন লেগেছে শুনেছি। শুনেই বাড়ি থেকে কান্নাকাটি করে এসেছি।’

প্রসঙ্গত, গতকাল ভোররাত সোয়া ৩টার দিকে আরমানিটোলার ওই ভবনে আগুন লাগে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। ১৯টি ইউনিটের তিন ঘণ্টার চেষ্টায় গতকাল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। আরমানিটোলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট ২১ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডে মোট ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।