প্রেমিকাকে জন্মদিনের উপহার দিতে গভীর রাতে তার বাড়িতে যান প্রেমিক। বিষয়টি টের পেয়ে প্রেমিককে ধরে ফেলেন বাড়ির লোকজন। পরে তাকে খুটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করে ফেসবুকে ‘চোর’ উল্লেখ করে ছবি ছড়িয়ে দেন তারা। এ ঘটনায় উভয় পরিবার মামলা দায়ের করলে উভয়পক্ষের দুই জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গতকাল রোববার ফেনীর সোনাগাজীর বগাদানা ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই পরিবারের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হলে প্রেমিক হামিদুর রহমান আজাদ ও প্রেমিকার ভাই দীন মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়, পাঁচ বছরর আগে স্কুলছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতেন হামিদুর রহমান আজাদ। দুই বছর আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমিকার যোগসাজশে রোববার রাত দুইটায় ওই ছাত্রীকে জন্মদিনের উপহার দিতে তার ঘরে প্রবেশ করেন আজাদ। বিষয়টি টের পেয়ে প্রেমিকার পরিবারের লোকজন আজাদকে আটক করে বেধড়ক পিটিয়ে ঘরের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। পরে ছবি তুলে দীন মোহাম্মদের ফেসবুক আইডি থেকে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন ‘…ধরা খেয়েছে স্বর্ণ চোর। রাত তিনটায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেছে, পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ।’
খবর পেয়ে পুলিশ প্রেমিক আজাদকে উদ্ধার করে। এরপর সোনাগাজী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
মেয়ের বাবা অভিযোগ করেন, দুই বছর ধরে আজাদ তার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছে। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আজাদ রোববার রাতে কৌশলে ঘরে ঢুকে মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। পরে তাকে আটক করে রশি দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। তার ছেলের সঙ্গে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তার ছেলের লাঠির আঘাতে আজাদের মাথা ফেটে যায়। তিনি আজাদকে একমাত্র আসামি করে তার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে আজাদের বাবা অভিযোগ করেন, তার ছেলের সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। রোববার মেয়েটির জন্মদিন ছিল। মেয়েটি বিষয়টি তার ছেলেকে জানালে সে দুই প্যাকেট লজেন্স ও একটি কলম উপহার নিয়ে তার বাড়িতে যায়। রাতে সেখানে খাওয়াদাওয়াও করে। কিন্তু, গভীর রাতে তার ছেলেকে নির্মমভাবে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালায় তারা। দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ণ চুরির অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তাই এ ব্যাপারে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে স্কুলছাত্রীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে হামিদুর রহমান আজাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার বাবা। আর খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে দীন মোহাম্মদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে ছেলের বাবা। পরে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।