জামায়াতের মতো একই ধারায় ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে হেফাজতে ইসলাম রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক।
শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ‘জামায়াত-হেফাজত চক্রের বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতা: সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এ ওয়েবিনারে মন্ত্রী বলেন, জামায়াত ইসলাম ধর্মকে অপব্যাখ্যা করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের জন্য ইসলামকে ব্যবহার করে। এটা জাতির কাছে স্পষ্ট। হেফাজতে ইসলাম একই ধারায় ইসলামকে ব্যবহার করতে চাচ্ছে, এ বিষয়ে মানুষের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব এবং ভুল ধারণা ছিল। গত কিছুদিনের ঘটনা, যেমন ভাস্কর্য বিষয়ে তাদের অবস্থান এবং উদ্দেশ্য খুবই পরিষ্কার হয়ে যায়। তারা যখন বলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য থাকবে না, তারা কিন্তু বলেনি কোনো ভাস্কর্য থাকবে না।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, হেফাজতে ইসলাম জামায়াতের মতো একই ধারায় ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায়, তা সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজতের তাণ্ডব ও কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত পরিষ্কার। স্বাধীনতা মানে না বলেই তারা সুবর্ণজয়ন্তী বানচাল করার চেষ্টা করেছে। তাদের উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করা ও বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত করা।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, যারা জাতীয় সঙ্গীত মানে না, জাতির পিতাকে মানে না, সংবিধান মানে না তাদের ছাড় দেওয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে প্রতারণা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর আগে আরও দুই বার বাংলাদেশে এসেছিলেন। তখন হেফাজতকে কোথাও দেখা যায়নি। এবার তারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বানচাল করার জন্যই মোদীর বিরোধিতার কথা বলে সারাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। বিলম্বে হলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা যেন ভবিষ্যতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত করতে না পারে সে ব্যবস্থাই সরকার করবে বলে আমি আশা করি।
ওয়েবমিনারে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সমাজকর্মী রাশেক রহমান, ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা, ওয়ান বাংলাদেশের সভাপতি প্রফেসর রাশেদুল হাসান, টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি ফোরাম ফর সেক্যুলার হিউম্যানিজম তুরস্ক শাখার সাধারণ সম্পাদক শাকিল রেজা ইফতি, গৌরব ৭১-এর সাধারণ সম্পাদক এম শাহীন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, অপরাজেয় বাংলার সদস্য সচিব এইচ রহমান মিলু, নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল।