৪২ লাখ টাকায় দুটি ভাস্কর্যের বেদি নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ব্যয় বেড়ে সেই অর্থ দাঁড়িয়েছে এক কোটি বারো লাখ টাকায়, যার নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে শুরু হওয়া দুটি ভাস্কর্যের বেদি নির্মাণ কাজ ২০১৯ এর জুন-জুলাই মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সুতিয়া কর্পোরেশন। বছরের বেশিরভাগ সময় কাজ বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন সময় বেড়েছে প্রকল্পের খরচের পরিমাণ। যা একের পর এক অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যদিকে চুক্তি অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু ও নজরুলের মূল ভাস্কর্য নির্মাণ বাবদ শিল্পী শ্যামল চৌধুরীকে দেয়া হয়েছে ৫৫ লাখ টাকা।
অভিযোগ রয়েছে পরিকল্পনা ও ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের দুই কর্মকর্তার সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বারবার ব্যয় বৃদ্ধি করছে এবং কারণ হিসেবে তুলে ধরছে বেদির নকশা পরিবর্তন করাকে। যা দেখিয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কর্মকর্তা জানান সম্পূর্ণ কাজটি শেষ করতে আরো ১০-১৫ লাখ টাকার ব্যয় দেখানো হবে। যেখানে নকশা পরিবর্তন করা ও দ্রুত নির্মান কাজ শেষ করার কথা উল্লেখ করা হবে। সেটি বাস্তবায়নে কাজ করবে দপ্তরটির একাধিক কর্মকর্তা।
ভাস্কর্য নির্মাণের ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রকল্পের অবস্থা জানতে চাইলে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তর পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, এগুলোর তথ্য বলা যাবেনা। খরচ কতো হইসে এগুলা বলতে আমি বাধ্য না। এগুলো নিউজ করতে হবে না। মাহাবুব ইলাহী সাহেব আসলে দেখা করো সব ঠিক হয়ে যাবে।
তার বক্তব্যের পর আবারো তথ্য জানতে চাইলে চটে গিয়ে বলেন আমর কোন কিছু জানা নেই। কোন নিউজের বিষয় না এগুলা। ভিতরের জিনিস ভিতরে রাখো।
তবে প্রকল্পের অর্থ বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেছে অর্থ দপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আবদুল্লাহ আল মামুন। তার বক্তব্য অনুযায়ী দুটি ভাস্কর্যের বেদি নির্মানের শুরুতে ৪২ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয় যা পরবর্তীতে বেড়ে ২০২১ সালের শুরু পর্যন্ত ছাড় করে রাখা হয়েছে ১কোটি ১২ লাখ টাকা প্রায়।
বরাদ্দকৃত অর্থের বিষয়ে মেসার্স সুতিয়া কর্পোরেশন এর মালিক জি এম নূরুল করিম স্বপন বলেন, আমি ব্যস্ত, এই নিয়ে কথা বলতে চাইনা তবে আগামী এক মাসের ভিতর কাজ শেষ হয়ে যাবে।
ভাস্কর্যের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির বিষয়ে রেজিস্ট্রার(ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, অনেক অভিযোগ থাকতে পারে তবে আগে কি হয়েছে তা আমরা এখন দেখতে চাইনা। আমাদের লক্ষ্য আগামী নজরুল জয়ন্তীর আগেই ভাস্কর্যের পুরো কাজ শেষ করা। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।
অন্যদিকে ২০২০ সালের ১৭মার্চ প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সম্পূর্ণ কাজ শেষ না করেই উদ্বোধন করেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন । যেখানে উদ্বোধনের পরপরই পলেস্তারা ও টাইলস খসে পড়তেও দেখা গিয়েছলো । বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সম্পূর্ণ নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগে বুঝে নেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গুনতে হয়েছে আলাদা অর্থ । ২০১৭ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি পাঁচ বছরের পথেও শেষ করতে পারেনি কবি নজরুলের ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ।