জাতীয়

ভিক্ষা করে সংসার চালান আওয়ামী লীগ নেতা

(Last Updated On: )

বজলুর রহমান (৭০), এক সময় চাকরি করতেন সাতক্ষীরার সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলে। নেতৃত্ব দিয়েছেন ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। বর্তমানে তিনি জেলা সদরের লাবসা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। অথচ তার জীবন চলছে ভিক্ষা করে।

জানা যায়, বজলুর রহমানের তিন সন্তান। বড় ছেলে আবুল কালাম সাবেক সেনা সদস্য, ছোট ছেলে আব্দুস সালাম বাবু সাতক্ষীরা শহরের মিল বাজারে ব্যবসা করেন। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। মা বাবার ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেয়ার কথা বলে জমিজমা ও বাড়ি লিখে নেয় ছোট ছেলে। এরপর একদিন বাড়ি থেকে মা বাবাকে বের করে দেন তিনি। বড় ছেলে ও মেয়ে জমিজমা ছোট ছেলেকে লিখে দেয়ার ক্ষোভে তাদের দায়িত্ব নিতে নারাজ।

বজলুর রহমানের প্রতিবেশী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শেখ এনামুজ্জামান নিপ্পন বলেন, বজলুর রহমান আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও অত্যন্ত পরিশ্রমী নেতা। সারাজীবন সততার সঙ্গে জীবন পরিচালনা করেছেন তিনি। কিন্তু শেষ বয়সে আজ তার এই অবস্থা।

একই এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, যে সন্তান পিতামাতাকে মারে, খেতে দেয় না, শেষ বয়সে ঘর থেকে বের করে দেয় তাদের শাস্তি পাওয়া উচিত।

বজলুর রহমান জানান, জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে সাতক্ষীরা শহরতলির মাগুরা এলাকায় চার কাঠা জমিতে বাড়ি নির্মাণ করেছিলাম। আমি অন্য সন্তানদের কিছু না দিয়ে পুরো জমি ও বাড়ি ছোট ছেলেকে লিখে দিয়েছি। তারা আমার ও আমার স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছিলো। কিন্তু তিন মাস আগে ছেলে ও ছেলের বৌ আমাদের মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। অন্য সন্তানরা অভিমান করে আমাদের দায়িত্ব নেয়নি। সারাদিন বিভিন্ন দোকানে ও মানুষের দ্বারে ঘুরে ভিক্ষা করে যা পাই তাই দিয়ে বেঁচে আছি।

তিনি জানান, এই ঘটনায় অনেকের কাছে বিচার চেয়েও পাননি তিনি।

সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাহিদুর রহমান বলেন, বজলুর রহমান বয়স্ক ভাতা পান। ভিক্ষা করার বিষয়টি নিয়ে তার ছেলের সঙ্গে সাথে কথা বলেছি। ছেলে বাবা-মার দায়িত্ব না নিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিষয়টি জানেন না উল্লেখ করে লাবসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম ঘটনাটির বিষয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানান।

তবে এ বিষয়ে বজলুর রহমানের ছোট ছেলে আব্দুস সালাম বাবু বলেন, আমার বাবার মাথায় সমস্যা আছে। উনি কখন কি করে তা বুঝে উঠতে পারি না। আমি বেশ কিছুদিন বাড়িতে ছিলাম না। এখন শুনছি তিনি ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছেন। তাদেরকে মারধর করা হয়নি। আমার স্ত্রীর সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়েছিলো। এরপরই রাগ করে অন্যের বাড়িতে ঘর ভাড়া করেন তারা। আমি তাদের বুঝিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে আনবো।