‘ট্রিপল ট্রাবল’, পোলিশ শিশুতোষ সিনেমা। পরিচালনা করেছেন মার্তা কারভোসকা। এই ছবিটির প্রদর্শনীর মাধ্যমে শনিবার ঢাকায় শুরু হলো আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উত্সব। এ উৎসবে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩টি ভেন্যুতে ৩৭টি দেশের ১৭৯টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র।
শনিবার বিকেলে শাহবাগের কেন্দ্রীয় সরকারির গণগ্রন্থাগার চত্বরে ছিল ১৪তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ-২০২১-এর উদ্বোধন। চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবটির উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। মিলনায়তনের বাইরে উদ্বোধনী সংগীত, জাতীয় সংগীত ও পতাকা উত্তোলনের পর শওকত ওসমান মিলনায়তনে ছিল প্রদীপ প্রজ্বালন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শিশুদের ভেতরে রয়েছে সুপ্ত প্রতিভা, শিশুরা স্বপ্নবান। আগামী প্রজন্ম আমাদের দেশের চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নেবে। দেশমাতৃকাকে এগিয়ে নিতে চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। আমি আশাবাদী, এই উৎসব থেকে অনেক প্রতিভা বেরিয়ে আসবে।’ কে এম খালিদ বলেন, ‘শিশুদের জন্য অসাধারণ এই আয়োজন করেছে শিশুরাই। এই আয়োজন দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি।’ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়েছে চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের অনুষ্ঠান সম্পাদক রায়ীদ মোরশেদ মনন, উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরেন উৎসব পরিচালক ফারিহা জান্নাত মিম।
রোববার থেকে শাহবাগের কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেলা ১১টা, বেলা ২টা, বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায়—মোট ৪ বার চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। প্রতিটি প্রদর্শনীতে একাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখানো হবে। উত্সবের সব প্রদর্শনী অভিভাবক, শিশু-কিশোরসহ সবার জন্য উন্মুক্ত। মুখে মাস্ক থাকলেই সেটি প্রদর্শনীর টিকিট হিসেবে গণ্য হবে।
উৎসবটির অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে থাকছে বাংলাদেশি শিশুদের নির্মিত প্রতিযোগিতা বিভাগ। এই বিভাগে ৬১টি চলচ্চিত্রের মধ্যে নির্বাচিত ১৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এই ১৯টি চলচ্চিত্রের ৫টিকে দেওয়া হবে পুরস্কার। পুরস্কারের জন্য গঠিত ৫ সদস্যের জুরিবোর্ডের সবাই শিশু-কিশোর। ‘ইয়ং বাংলাদেশি ট্যালেন্ট’ শীর্ষক বিভাগে ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ নির্মাতারা অংশ নিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রয়েছে ‘মুক্তির চলচ্চিত্র’ শিরোনামে বিশেষ আন্তর্জাতিক বিভাগ। রয়েছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগও। এ বিভাগে জমা পড়েছিল ৮১টি দেশের ১১১৬টি চলচ্চিত্র, যার মধ্যে উৎসব কমিটির দ্বারা প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশসহ অন্যান্য ৩৭টি দেশের মোট ১১৬টি চলচ্চিত্র। গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও বিভিন্ন দেশের শিশুদের বানানো চলচ্চিত্র নিয়ে থাকছে প্রতিযোগিতা বিভাগ, যেখান থেকে একটি চলচ্চিত্রকে পুরস্কার দেওয়া হবে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নতুন একটি সামাজিক চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা বিভাগ রাখা হয়েছে ‘নিউ নরমাল’ শিরোনামে। উৎসবে প্রতিনিধিদের জন্য বিভিন্ন কর্মশালা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এ বছর থাকবে মোট ৪টি কর্মশালা।
৩১ জানুয়ারি রোববার বেলা ১১টায় খুদে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের চিত্রনাট্য লেখার কর্মশালা করাবেন চলচ্চিত্র সমালোচক সাদিয়া খালিদ রীতি, সন্ধ্যা ৬টায় একটি কর্মশালায় উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদার।
রোববার যে ছবিগুলো দেখা যাবে
বেলা ৩টায় (জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে)
বাংলাদেশি শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রদর্শিতব্য চলচ্চিত্র: ত্রিকোণমিতি, আই হ্যাভ নো হোম, পাপেট্রি, বেস্ট ফ্রেন্ড, এলার্ম, লাইট অব লাক, টেনোর, দ্য ক্রেজি বার্ড, ব্লাইন্ড, আনসিন স্যাটিসফ্যাকশন, ঠোংগা, ইনসমনিয়া, ওয়ান ডে, এরাটাম, ক্রস সেকশন, অ্যান ইন্টারভিউ অব এ মেরিওনেট, নাইট এলোন, এ ডে লাইক এভরি ডে, আমিও বাংলাদেশ।
বেলা ১১টায় (শওকত ওসমান মিলনায়তন)
ডিজার্ভিং (ফিলিপাইন), এল মাগো জর্জস্ (হাঙ্গেরি), ফুসেল (জার্মানি) , নেস্টলিং (রাশিয়া), লাইফ গন উইথ দ্য উইন্ড (ইরান), দ্য ট্রি হ্যাজ বিন প্লান্টেড (আর্জেন্টিনা), দ্য চিক (তুর্কি), ক্যাসান্দ্রেস সিক্রেট (ফ্রান্স), দ্য সাইলেন্স অব দ্য রিভার (পেরু), ভাইরাল কিডস্ (ফিলিপাইন), ইওর টাইম (পর্তুগাল), ইউরোপোকা (ভারত)।
বেলা ২টা (শওকত ওসমান মিলনায়তন)
দ্য পেইনটেড লেডি বার্ড (আয়ারল্যান্ড), পেয়ারসোনিক প্রাবাবসি এলজবেটি (পোল্যান্ড), বিওন্ড দ্য লাইন (কোরিয়া), রুসলান (আয়ারল্যান্ড), টোক (স্পেন), সি ওয়ার্ল্ড (ইন্দোনেশিয়া), রায়া (ইরান), মাই মাদার ইজ দ্য বেস্ট (হাঙ্গেরি), রিফিউজি (স্পেন), ফ্লাই (স্পেন), দ্য লিজেন্ড অব অরিয়ল (স্পেন)।
বিকেল ৪টায় (শওকত ওসমান মিলনায়তন)
দ্য ফুলট (ভারত)।
সন্ধ্যা ৬টায় (শওকত ওসমান মিলনায়তন)
ডাইজেসন (ফ্রান্স), ফ্রম মাজিদ উইথ লাভ (তুর্কি), টবি অ্যান্ড দ্য টারবোবাস (জার্মানি), মাই গেম (ইরান), দ্য ক্লাব অব আগলি চিল্ড্রেন (নেদারল্যান্ডস)