চট্টগ্রাম

ইউটিউবে ভিডিও দেখে ডাক্তারি

(Last Updated On: )

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ব্যথা নিরাময়ে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারাত্মক শারীরিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন খলিলুর রহমান (৫৫) নামে এক দরিদ্র রিকশা চালক। কামরুল ইসলাম নামে এক ভুয়া চিকিৎসক থেরাপি দেয়ার নামে তার শরীরের বড় একটি অংশ ঝলসে দিয়েছে।

এই ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জামশেদুল আলম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ওই ভুয়া চিকিৎসককে এক লাখ টাকা জরিমানা ও রোগীর যাবতীয় চিকিৎসা খরচ বহনের সাজা দিয়েছেন।

রবিবার (২০ এপ্রিল) রাত ১২ টার দিকে বাঁশখালী হাসপাতালে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদুল আলম। কামরুল ইসলাম নামে ওই পল্লী চিকিৎসক ফেসবুক ও ইউটিউব ভিডিও দেখে থেরাপি চিকিৎসা দিতেন বলে তাঁর স্বীকৃতিতে জানা গেছে এবং সেই দোষ স্বীকার করেন নিজেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যায় কোমর ও পিটের ব্যাথা নিয়ে বাঁশখালীর শেখেরখীল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আলিবলি পাড়া এলাকার মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে দরিদ্র রিকশা চালক খলিলুর রহমান নাপোড়া বাজারস্থ শেখেরখীল এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে কামরুল ইসলামের চেম্বারে যান।

কামরুল ইসলাম দীর্ঘ ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করে আসছিলেন। এদিকে থেরাপি দিতে গিয়ে রিকশা চালক খলিলুর রহমানের শরীর ঝলসে গেলে তার আর্তচিৎকারে লোকজন ছুটে আসেন।

এ সময় কামরুল ইসলাম তাকে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে রাখেন। পরে রবিবার রাত ১১ টার দিকে অচেতন অবস্থায় রিকশা চালক খলিলুর রহমানকে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তার আত্মীয় স্বজনরা। রোগীর সাথে ভুয়া ডাক্তার কামরুল ইসলামকেও উপজেলা সদরে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা।

খবর পেয়ে রাত ১১ টার দিকে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জামশেদুল আলম। তিনি বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক, রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভুয়া ডাক্তার কামরুল ইসলামকে জেরা করা হয়।

এ সময় তিনি ফেসবুক-ইউটিউব ভিডিও দেখে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করছেন বলে নিজের দোষ স্বীকার করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই ভুয়া ডাক্তারকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করার পাশাপাশি ওই রোগীর যাবতীয় চিকিৎসা খরচ বহনের নির্দেশ দিয়ে সাজা প্রদান করেন।

প্রায় দুই ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। গভীর রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এমন অভিযানে এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছেন।