জাতীয়

কন্যা সন্তান হলে উপহার দেন যে পুলিশ


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

নিজের দায়িত্বাধীন এলাকায় কারো ঘরে কন্যা সন্তান হলে তিনি সেই পরিবারকে উপহার পৌঁছে দেন। টাঙ্গাইলের কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. মোশাররফ হোসেনের এমন একটি উদ্যোগ আলোচনায় এসেছে ফেসবুকে।

টাঙ্গাইলের কাগমারী পুলিশ ফাঁড়িতে টানানো একটি ব্যানার, তাতে লেখা, ‘‘কন্যা সন্তান বোঝা নয়, আশীর্বাদ। কন্যা সন্তান জন্ম হলে ফোন করুন, উপহার পৌছে যাবে সাথে সাথে।’’ তার নীচে থানার ইনচার্জ মোঃ মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের মোবাইল নাম্বারটি দেয়া। কেন এমন উদ্যোগ নেয়ার কথা মনে হয়েছে তার?

‘‘মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল, চরাঞ্চলে মামলা তদন্ত করতে গেলে দেখি যাদের কন্যাসন্তান আছে, তাদের মন খারাপ। অনেকে কারণ জানতে চাইলে বলে যে, ‘স্যার আমার তিনটা মেয়ে, আমার পরিবারের বিষয়টিতে মন খারাপ।’ সেকারণেই আমি চিন্তা করলাম ছোট একটা উপহার দিয়েও যদি তাদেরকে এই বার্তা দিতে পারি যে ,ছেলে হোক মেয়ে হোক সবাই সমান। মেয়েকে যদি ঠিকমতো পড়াশোনা করানো যায় তাহলে মেয়েও একসময় ছেলের চেয়ে কোনো অংশে কম হবে না। বরং ছেলের চেয়ে মেয়েরা বাবা-মাদের বৃদ্ধ বয়সে বা যেকোনো সময়ে বেশি মূল্যায়ন করে। সেকারণেই আমার ফাঁড়ি এলাকার কাগমারির জন্য এই উদ্যোগটা নিয়েছি।’’ ডয়চে ভেলেকে ফোনে নিজের উদ্যোগটি সম্পর্কে এভাবেই জানান মোশাররফ।

নবজাতকের অভিভাবকদের কেউ যোগাযোগ করলে তিনি বাড়ি গিয়ে তার উপহারের প্যাকেট ও একটি ক্রেস্ট পৌঁছে দেন। ক্রেস্টে থাকে বাবা-মা ও নবজাতকের জন্য শুভেচ্ছা বার্তা। এজন্য যে খরচ হয় সেটি নিজের বেতন থেকেই দিচ্ছেন বলে জানান তিনি। বলেন, উপহারটা হয়তো ছোট, কিন্তু কন্যা সন্তানের বাবা-মা যাতে গর্বিত ও সচেতন হন, সেটিই তার লক্ষ্য।

মোশাররফ কয়েকদিন আগে তার এই উদ্যোগের কথাটি একটি ব্যানারে লিখে পুলিশ ফাঁড়ির দেয়ালে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় একজন সাংবাদিকের চোখে পড়লে তিনি ছবি তুলে ফেসবুকে দেন। সেই ছবি দেখে উল্লেখিত মোবাইল নাম্বারে ফোন করেছিলেন মাসখানেক আগে কন্যাসন্তানের বাবা হওয়া ফারুক। বিস্তারিত জানার আধাঘণ্টার মধ্যেই তার বাড়িতে হাজির মোশাররফ। তাতে অনেকটা অবাক হয়েছেন ফারুক। ‘‘কন্যা সন্তান আশীর্বাদ সেটা জানার পরেও সবাই মনে করে ছেলে হলেই ভালো। তিনি যখন গিফট নিয়ে এসেছেন, তখন মনে হয়েছে সত্যিই আমার সন্তানও সৌভাগ্যাবান. আমিও সৌভাগ্যবান,’’ বলেন তিনি।

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন এমন অনেক কন্যাশিশুর বাবা-মায়ের ফোন পাচ্ছেন বলে জানান মোশাররফ। আবার নবজাতক নয় এমন শিশুর বাবা-মায়েরাও ফোন দিচ্ছেন তাকে। মোশাররফ বলেন, ‘‘সারাদেশে আমার পক্ষে উপহার পাঠানো আসলে সম্ভব না। আমি শুধু আমার ফাঁড়ি এলাকা কাগমারীর জন্য এই উদ্যোগটি নিয়েছি। ইচ্ছা থাকলেও এর বেশি তো দেয়ার সামর্থ্য আমার নেই।’’

বুধবার পর্যন্ত দুইদিনে চারটি পরিবারকে মোশাররফ তার উপহার পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান। নিজের সামর্থ্যের মধ্যে এমন কাজ তিনি অব্যাহত রাখতে চান। সূত্র: ডয়েচে ভেলে।