নারায়ণগঞ্জের আলোচিত কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন তাকে স্বামী দাবি করা ব্যবসায়ী সাঈদা আক্তার ওরফে সায়েদা শিউলি (৪০)।
রোববার (১৬ মে) রাতে তিনি বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় এ মামলা করেন।
মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। মামলায় খোরশেদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে ওই নারীর বিরুদ্ধে আপত্তিকর, বানোয়াট ও মিথ্যা কাহিনী সাজিয়ে কুৎসা রটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় ফেরদৌস আক্তার রেহানা ওরফে রেহানা মুসকান নামে অপর এক নারীকেও আসামি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার বাদী সাঈদা আক্তার ওরফে সায়েদা শিউলি ফতুল্লা থানার ৩২১ নম্বর উত্তর চাষাড়ার মৃত মো. জহিরুল হকের মেয়ে। তিনি নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ সিএনজি অনার্স অ্যাসোসিয়েনের সভাপতি এবং গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও বিজেএমই এর সদস্য।
সাঈদা আক্তার ওরফে সায়েদা শিউলি অভিযোগ করেন, ব্যবসার কাজে প্রায় সময় তাকে দেশের বাইরে অবস্থান করতে হয়। খোরশেদের সঙ্গে তার পরিচয় ছোটবেলা থেকে। ইতোপূর্বে তার একবার বিয়ে হয়েছিল। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। সেই ঘরে সন্তানও রয়েছে।
পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে খোরশেদ এবং তিনি ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করতেন। একপর্যায়ে খোরশেদ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ২০২০ সালের ২ আগস্ট সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরের এসএস ফিলিং স্টেশনে কাউন্সিলর খোরশেদ নিজেই কাজী নিয়ে গিয়ে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি এবং খোরশেদ বিভিন্ন স্থানে একসঙ্গে রাত্রিযাপনসহ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে খোরশেদ তার সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
এ অবস্থায় তিনি ব্যবসায়িক কাজে দুবাই চলে গেলে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল খোরশেদ ফেসবুক লাইভে এসে তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও মানহানিমূলক তথ্য উপস্থাপন করে এবং নানা বাজে মন্তব্য করে কুৎসা রটান। এর একদিন পর ২৫ এপ্রিল ফেরদৌস আক্তার রেহানা ওরফে রেহানা মুসকান নামে এক নারী খোরশেদের বাসায় বসে লাইভে এসে তার সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করেন। তাকে রাস্তার মেয়েদের সঙ্গে তুলনা করে আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন এবং তার চুল কেটে ফেলা হবে বলেও ফেসবুক লাইভে বলেন। এই দুটো বিষয়ই দুবাই থাকাকালীন তিনি তার এক বান্ধবীর নিকট থেকে জানতে পেরে পরবর্তীতে তাদের আইডি থেকে পুরো বিষয়টি দেখেছেন। তিনি এখন বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন এবং দেশেই অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।