জাতীয়

গর্ভবতীরাও নিতে পারবেন বুস্টার ডোজ


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

করোনাকালে গর্ভবতীরা করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষায় টিকা নিতে পারবেন কি-না, এমন দ্বন্দ্বের মধ্যে গত আগস্ট মাসে তাদেরকে টিকা দেওয়ার জন্য সুপারিশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় টিকা পরামর্শক কমিটি।

এরপর দেশে অন্তঃসত্ত্বা এবং স্তন্যদাত্রী মায়েদের কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়া শুরু হয়।

করোনাকালে গর্ভবতীরা করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষায় টিকা নিতে পারবেন কি-না, এমন দ্বন্দ্বের মধ্যে গত আগস্ট মাসে তাদেরকে টিকা দেওয়ার জন্য সুপারিশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় টিকা পরামর্শক কমিটি।

এরপর দেশে অন্তঃসত্ত্বা এবং স্তন্যদাত্রী মায়েদের কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়া শুরু হয়।এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ঘোষিত করোনার ‘অমিক্রন’ নামক ধরন শনাক্তের পর বুস্টার ডোজ দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে।

রোববার (১৯ ডিসেম্বর) থেকে দেশে করোনার টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের ষাটোর্ধ্ব নাগরিক, চিকিৎসকসহ সম্মুখসারির যোদ্ধাদের বুস্টার ডোজের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তবে এক্ষেত্রে গর্ভবতীদের জন্য আলাদা কোনও নির্দেশনা নেই।

এ প্রসঙ্গে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাহমিদা রশীদ স্বাতি বাংলানিউজকে বলেন, ইতিমধ্যে করোনার টিকা নিয়ে থাকলে এবং বর্তমানে গর্ভবতী হলে বুস্টার ডোজের জন্য যোগ্য হতে পারেন।

তিনি বলেন, গর্ভবতীদের জন্য করোনার টিকা গ্রহণ করা জরুরি। কারণ কোভিড-১৯ থেকে ভ্রুণের বিকাশে ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। রোগীর ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয়, এমনকি মারাও যাওয়া। গর্ভাবস্থায় করোনা আক্রান্ত হওয়ার ফলে প্রিটার্ম জন্ম এবং গর্ভাবস্থা হ্রাস সহ অন্যান্য জটিলতার ঝুঁকি বাড়ে। তাই করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো- টিকা গ্রহণ করা।  

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, করোনার টিকা গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারীদের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর। সেই সঙ্গে যারা ভবিষ্যতে গর্ভবতী হওয়ার আশা রাখে তাদের জন্য টিকা গ্রহণ জরুরি।

সিডিসি, আমেরিকান কলেজ অব অব অবস্টেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্টস (এসিওজি) এবং সোসাইটি ফর ম্যাটারনাল ফেটাল মেডিসিন (এসএমএফএম) এখন সুপারিশ করছে, ১৬ বছর এবং তার বেশি বয়সী যারা ইতিমধ্যে ইমিউনাইজড হয়েছেন- প্রত্যেকেই বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। সিডিসি’র সর্বশেষ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ১৬ বছর এবং তার বেশি বয়সী প্রত্যেকেই তাদের দ্বিতীয় ডোজের ছয় বা তার বেশি সময় পরে ফাইজার-বায়োএনটেক অথবা মডার্না টিকার তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করবেন।

ডা. ফাহমিদা রশীদ স্বাতি বলেন, দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও করোনা থেকে সুরক্ষা সময়ের সাথে সাথে কমতে শুরু করতে পারে। এজন্য সিডিসি গর্ভবতী সহ সকল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য একটি বুস্টার ডোজ অনুমোদন করেছে। গর্ভাবস্থায় বুস্টার ডোজ অতিরিক্ত সুরক্ষা দেবে, এটি প্রসব পরবর্তী প্রাথমিক সময়ে প্রসূতিকে নিরাপদ রাখতে সাহায্য করতে পারে। কারণ সন্তান প্রসবের পর অন্তত ৪২ দিন প্রসূতির জটিলতার ঝুঁকি বেশি থাকে।

‘গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা তাদের টিকা দেওয়া মায়েদের জরায়ু থেকে প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টিবডি দ্বারা উপকৃত হতে পারে, যা জন্মের পর প্রসারিত হয়। সুতরাং একটি বুস্টার ডোজ শুধুমাত্র গর্ভবতী থাকাকালীন নিরাপদ রাখে না, এটি ছোট্ট সোনামণির জন্মের পর তার জন্য অতিরিক্ত সুবিধাও প্রদান করতে পারে’ বলেন ডা. ফাহমিদা।

চট্টগ্রামে মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ মানুষকে করোনার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। দুই ডোজ পেয়েছেন ১৩ শতাংশ। টিকার জন্য মোট নিবন্ধন করেছেন প্রায় ৪১ লাখ।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই তথ্যমতে, চট্টগ্রামে মোট জনসংখ্যা ৯৫ লাখ ৫১ হাজার ৬০৫ জন। টিকা দেওয়া হচ্ছে পঁচিশ বছরের বেশি বয়সী সাধারণ নাগরিক ও আঠারো বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত জনসংখ্যা ৩৫ লাখ ৯৭৭ জন। বিভিন্ন উপজেলায় আছেন ৬০ লাখ ৪৫ হাজার ৬২৮ জন। ঢাকায় বুস্টার ডোজের কার্যক্রম শুরু হলেও এখনও চট্টগ্রামের জন্য কোনও নির্দেশনা আসেনি বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী।