জাতীয়

জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী বুধবার

(Last Updated On: জানুয়ারি ১৯, ২০২২)

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি)। ১৯৩৬ সালের এই দিনে বগুড়ার গাবতলীর নশিপুর ইউনিয়নের বাগবাড়ী গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মনসুর রহমান পেশায় ছিলেন একজন রসায়নবিদ।

জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করবে বিএনপি। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি নেতারা আজ বুধবার সকালে শেরেবাংলা নগরে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দিবসটি উপলক্ষে বেলা ১১টায় বিএনপির জাতীয় নেতারা শেরেবাংলানগরে জিয়ার কবরে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। দৈনিক সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে এবং ইতিমধ্যে দলের পক্ষ থেকে পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে।

এছাড়া দলের উদ্যোগে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা সভার স্থান, তারিখ ও সময় পরে জানানো হবে। এদিন বিএনপি সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ড্যাবের উদ্যোগে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার একই স্থানে বিএনপির উদ্যোগে মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে।

অনুরূপভাবে সারাদেশে বিভিন্ন পর্যায়ের ইউনিট নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে।

এদিকে গণমাধ্যমে পাঠানো বাণীতে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ জিয়ার সুদক্ষ নেতৃত্বে দেশের সার্বভৌমত্ব শক্তিশালী হয় এবং স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদার আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। তাই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা নিজেদের নীলনকশা বাস্তবায়নের কাঁটা ভেবে জিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কিন্তু তার এই আত্মত্যাগে জনগণের মধ্যে গড়ে উঠেছে দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে এক ইস্পাতকঠিন গণঐক্য।

তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনেই আমাদের জাতিসত্তার সঠিক স্বরূপটি ফুটে ওঠে, যা আমাদের ভৌগোলিক জাতিসত্তার সুনির্দিষ্ট পরিচয় সুস্পষ্ট হয়। বিশ^ মানচিত্রে আমাদের আত্মপরিচয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।

মির্জা ফখরুল বলেন, জাতির এক ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমান এক ঐতিহাসিক যুগান্তকারী দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয় এবং তিনি যুদ্ধে অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন। তিনি হন বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় মহান নেতা।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের ওপর আক্রমণ করার পর জিয়াউর রহমান তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরে ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীণ রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর তারই সহকর্মী খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন।

পরবর্তী সময়ে নানা রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে সিপাহি-জনতার ঐক্যবদ্ধ অভ্যুত্থান ঘটে। দেশের সেই চরম ক্রান্তিকালে সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াউর রহমান নেতৃত্বের হাল ধরেন। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। চার বছর ক্ষমতায় থাকার পর ১৯৮১ সালের ৩০ মে একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে শাহাদাতবরণ করেন জিয়াউর রহমান।