লাইফ স্টাইল

তাওবা জীবন বদলে দেয়

(Last Updated On: জানুয়ারি ২৩, ২০২১)

তাওবা মুমিনের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাহাবিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল এটি। তাঁরা শত্রু থেকে সতর্ক থাকার চেয়েও বেশি পাপাচার থেকে সতর্ক থাকতেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন, ‘আল্লাহ, আমাদের হালাল কাজের তাওফিক দাও। হারাম কাজ থেকে বিরত রাখো। তোমার আনুগত্যের তাওফিক দাও।’

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পাপ থেকে অন্তরের পাপ বেশি ভয়ানক। তা হৃদয়ে কুপ্রভাব ফেলে। অন্তরের পাপাচার হলো অহংকার ও গর্ব করা, আত্মপ্রবঞ্চনা ও মোহাবিষ্ট হওয়া, লৌকিকতা ও প্রদর্শনেচ্ছা, মানুষের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা, হিংসা ও বিদ্বেষ লালন করা। এ ধরনের পাপ রোজার প্রাণ নষ্ট করে দেয়। তাহাজ্জুদের প্রভাব দূর করে। আগুন যেভাবে কাঠ পুড়িয়ে ছাই করে ফেলে, ঠিক তেমনি অন্তরের পাপ মানুষের ভালো কাজ নষ্ট করে ফেলে। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তির মাঝে বিন্দু পরিমাণ অহংকার আছে সে কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (মুসলিম)

মুমিনরা সাধারণ আদম সন্তান, পাপপ্রবণ। কিন্তু যখনই তারা মাটির আকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়, তখনই আল্লাহর কাছে তাওবা করে। তাঁর কাছে ফিরে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখনই শয়তানের কোনো দল তাদের কুমন্ত্রণা দেয়, তখনই তারা আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তাদের চোখ খুলে যায়।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২০১)

তাঁরা আল্লাহকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি কখনো ভুলে যান না। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান, তোমরা শয়তানের উপাসনা করো না। নিশ্চয় সে সুস্পষ্ট শত্রু। তোমরা আমারই ইবাদত করো। আর এটাই সরল-সঠিক পথ।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত : ৬০-৬১)

মুমিনরা কখনো প্রবৃত্তির তাড়নায় পাপ করলেও শয়তান ও তার দলের কাছে নতি স্বীকার করে না; বরং তাদের মা-বাবা আদম-হাওয়ার মতোই বলে ওঠে, ‘হে আমাদের প্রভু, আমরা নিজেদের ওপর অত্যাচার করেছি। আপনি যদি আমাদের ক্ষমা না করেন, আমাদের ওপর দয়া না করেন, তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২৩)

কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তারা কোনো গর্হিত কাজ করে ফেলে কিংবা নিজেদের ওপর অত্যাচার করে সঙ্গে সঙ্গে তারা আল্লাহর স্মরণ করে। তারপর নিজেদের পাপাচারের জন্য ক্ষমা চায়। আর আল্লাহ ছাড়া কে ক্ষমা করতে পারে? তারা জেনে-শুনে আর পাপের পুনরাবৃত্তি করে না। (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৫)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে প্রকৃত মুমিন হয়ে গুনাহমুক্ত জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন।