আন্তর্জাতিক

দুর্ভোগ-দুর্বিপাকে দিন কাটাচ্ছেন দক্ষিণ কাট্টলীর ১০ হাজার মানুষ


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

নগরীর দক্ষিণ কাট্টলী ফজলুল হাজের ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন মোস্তফা হাকিম কলেজের এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষা শেষে বের হয়ে যাওয়ার পথে নালায় পড়ে কাহিল অবস্থা তার। নালা ছোট হওয়ায় বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রূপন কান্তি সেনগুপ্ত বলেন, হলে ঢুকার পথে যদি এ দুর্ঘটনা ঘটত, তাহলে এ ছাত্রীর পরীক্ষাও দেয়া হত না। গত সপ্তাহে লঘু চাপের প্রভাবে হওয়া সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় এ দুরাবস্থা। গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে এলাকায় প্রায় দশহাজারেরও বেশি মানুষ এ অসহনীয় দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন। এলাকার ডা. কামিনী মোহন সড়ক, জেলে পাড়া সড়ক, প্রাণহরি দাশ রোড, কলেজ রোডসহ বেশ কয়েকটি সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। কিছু কিছু সড়কের বিভিন্ন স্থানে চলাচলের পথও বন্ধ। বিকল্প ভগ্নপ্রায় সড়কে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের।

সিডিএ’র জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অধীনে মহেশখাল ও গয়না খালের দু’পাশে গাইড ওয়াল তৈরির কাজ শুরুর পর থেকে এলাকাবাসীর এ দুর্ভোগের শুরু। সাগরিকা স্টেডিয়াম সংলগ্ন কামিনী মোহন বাই লেন থেকে শুরু করে জেলে পাড়া সড়ক হয়ে ওয়ার্ড অফিস পর্যন্ত রাস্তাটি নেই বললে চলে। মহেশ খালের পাশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজের জন্য সড়কে যোগযোগের পথ প্রায় বিচ্ছিন্ন। অন্যদিকে  বিটাক বাজার থেকে কলেজ রোডের শেষ মাথায় গয়না খালের উপর নির্মিত কালভার্টটি খুলে না দেয়ায় চলাচলের পথ এখনও বন্ধ। এছাড়া প্রাণহরি দাশ রোডসহ অন্যান্য বাইলেনগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। যার ফলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

জেলেপাড়া সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা খেলন দাশ বলেন, মহেশ খালের গাইডওয়াল নির্মাণের কারণে কামিনী মোহন সড়ক হয়ে জেলেপাড়া সড়ক পর্যন্ত পুরো রাস্তা এখন বন্ধ। সাধারণের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম বাইলেনগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। সাধারণ রিকশা করে এ পথে চলাচল করা যায় না। ব্যাটারি চালিত রিকশা একমাত্র ভরসা। ভগ্নপ্রায় সড়কগুলোতে প্রতিদিন ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে,  বৃহৎ জেলে পাড়া ছাড়াও, দুর্গা পাড়া, শ্যামল চক্রবর্তীর বাড়ি, ধোঁপা পাড়া, মহাজন বাড়ি, খাস্তগীর পাড়া, বিশ^াস পাড়া, জানকী চৌধুরী বাড়ি, ছদু চৌধুরী বাড়ি, বাচা মিয়ার বাড়ি, নবাবউল্লাহ চৌধুরী বাড়িসহ পুরো এলাকার প্রায় দশহাজার মানুষকে চলাচলের জন্য সীমাহীন কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। এছাড়াও এলাকার বাইরে থাকা ফজলুল হাজেরা ডিগ্রি কলেজ ও পিএইচ আমিন একাডেমির শিক্ষার্থীরাও এ দুর্ভোগের শিকার।

কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা পুলক বলেন, আমরা যেন প্রাগৈতিহাসিক যুগের এক অবরুদ্ধ এলাকায় বসবাস করছি। ঘর থেকে বের হওয়ার পথে যত দুর্ভোগ। তিনি আরও বলেন, বিকল্প সব ব্যবস্থা ভেঙে গেছে। কলেজ রোডে গয়না খালের উপর পায়ে হেঁটে চলাচলের জন্য যে লোহার স্ল্যাবটি বসানো হয়েছে তাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে যে কোন সময়ে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলমান সিডিএ’র জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজে খুশি তারা। কিন্তু নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় কোন বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বিকল্প হিসেবে যে সব বাইলেন দিয়ে সাধারণ মানুষ চলাচল করত, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে তাও ভেঙে গেছে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এসব বাইলেনগুলো সংস্কারের কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার অভিযোগ করেও তারা কোন সুরাহা পাননি। সংস্কারের অনুরোধ করলেই তারা জলাবদ্ধতা প্রকল্প কাজের অজুহাত দেখান। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ না হলে জেলে পাড়া সংলগ্ন এ রাস্তাটি সংস্কার করা সম্ভব নয়। তবে এলাকার কিছু সড়কে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো সড়ক সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।