বোয়ালখালীতে সাংসদ মোছলেম উদ্দিনের জানাযা সম্পন্ন

বোয়ালখালী উপজেলা সদরের গোমদণ্ডী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দীন আহমদ এমপির দ্বিতীয় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় এ জানাযায় হাজারো মানুষের ঢল নামে। এর আগে ঢাকা থেকে দুপুর ২টায় কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার প্রয়াত সাংসদ মোছলেম উদ্দীনের মরদেহ নিয়ে আসে। হেলিকপ্টারের ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখতে ভীড় জমান কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম কধুরখীল গ্রামের সাংসদের নিজ বাড়িতে। সেখানে পাড়া প্রতিবেশিরা তাঁকে একনজর দেখতে ছুটে আসেন।

বিকেলে গোমদণ্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত জানাযায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা উপ মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান মো. আব্দুচ ছালাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম সেলিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন, পৌর মেয়র মো জহুরুল ইসলাম জহুর, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. নুরুল আমিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. রেজাউল করিম বাবুল, জাতীয়বাদী দল (বিএনপি) উপজেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নুরুন্নবী চৌধুরী, সদস্য সচিব ইউপি চেয়ারম্যান মো. হামিদুল হক মন্নান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি অধ্যাপক কানাই দাশ,বোয়ালখালী উপজেলার সভাপতি নজরুল ইসলাম আজাদ , বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী বোয়ালখালী উপজেলার সভাপতি ডা. অসীম কুমার চৌধুরী, খেলাঘর বোয়ালখালী উপজেলার সভাপতি আবুল ফজল বাবুল, দিশারী খেলাঘর আসরের সভাপতি জামাল আবদুল নাসের সহ চট্টগ্রাম মহানগর, জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ হাজারো মানুষ জানাজায় অংশ নেন।

মহানগর, জেলা উপজেলার আওয়ামী নেতাকর্মীরা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

সোমবার সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর প্রথম নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ১১টায় নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মাঠে সর্বশেষ নামাযে জানাযা শেষে গরীবুল্লাহ শাহ মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হবে।

গত রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও চার মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মোছলেম উদ্দিন আহমদ ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হন। পরে তিনি ওই কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম শহর শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৭১ সালে তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮২ সালে তিনি চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন।

২০০৫ সালের ২৩ জুলাই তিনি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন তিনি। আমৃত্যু চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

বোয়ালখালী আসনের সংসদ সদস্য জাসদ নেতা মাঈনুদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুর পর শূন্য হওয়া চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি এমপি নির্বাচিত হন মোছলেম উদ্দীন আহমদ।

বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রবীন এ নেতার মৃত্যুতে বিভিন্ন মহল থেকে গভীর শোক জানিয়েছেন।