প্রধান পাতা

বোয়ালখালীতে ৫ বছরেও শিশু আইমান হত্যার জট খোলেনি

(Last Updated On: জুলাই ২৫, ২০২১)

বিগত ৫ বছরেও চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে নিহত শিশু আইমান হক কায়েপের হত্যার কোনো জট খোলেনি। আসামি তো ধরা পড়েইনি, এতো বছরে এ হত্যার কোনো রহস্যই উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আইমান ঘর থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি দাবি করে পরদিন শুক্রবার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন আইমানের চাচাতো ভাই মো. শওকত হোসাইন। নিখোঁজের দু’দিন পর ১১ নভেম্বর শনিবার দুপুর ২টার দিকে তার বাড়ির রান্নাঘরে আইমানের লাশ পাওয়া যায়। ওই সময় আইমানকে জ্বীনে মেরে রান্না ঘরে রেখে গেছে বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা।

ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য এডিএম কোর্টে আবেদন করেছিল আইমানের পরিবার। এডিএম কোর্টের অনুমতি না পাওয়ায় পুলিশ আইমানের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে মর্গে প্রেরণ করে। সুরতহাল প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল, আইমানের চোখ খোলা অবস্থায় ছিলো। তার মাথা, মুখ, ঠোঁট ফোলা এবং জিহ্বা দাঁত দিয়ে কামড়ানো অবস্থায় ছিলো। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত নির্গত হয়েছিল। মলদ্বারে সামান্য মল বের হয়েছিল। এছাড়া শরীরের অন্যান্য স্থানে পচন ধরেছিল। এ ব্যাপারে বোয়ালখালী থানায় অপমৃত্যু মামলা রজু করা হয়।
 
এদিকে লাশ উদ্ধারের দীর্ঘ সাড়ে ৭ মাস পর বোয়ালখালী থানায় আসে আইমানের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। 

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় আইমানের মাথায় আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।  ফলে জট খুলতে শুরু করে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেও কিভাবে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে সে রহস্য এখনো উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। তবে আইমানকে হত্যার পর লাশ গুম করার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছিল পুলিশ। 

পুলিশ আরো জানায়, মাথায় আঘাত করে আইমানের মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল ঘাতকরা। এরপর আইমানের মরদেহ গুম করারও চেষ্টা করেছিল তারা। এ হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।  অপরাধী যেই হোক ছাড় পাবে না। খুব দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে এবং ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করা হবে বলেও তৎকালীন ওসি জানিয়েছিলেন। 

কিন্তু পরবর্তীতে ২০১৯ সালের শেষের দিকে মামলাটি পিআইবির নিকট হস্তান্তর করেন বোয়ালখালী থানা পুলিশ। গত ৫ বছরের মাথায়ও এ হত্যাকাণ্ডের জট খোলেনি। চিহ্নিত হয়নি কোনো অভিযুক্ত। মামলাটি রহস্য হয়েই রয়ে গেছে আজ অবধি।

চট্টগ্রামের পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক মো. রুস্তম আলী বলেন, মামলাটির তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।
 
প্রতিবেশীরা জানান, আইমানের পিতা চার ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয়। আইমানের বড় চাচা পরিবার নিয়ে পৃথক বসবাস করলেও বাকিরা যৌথভাবে থাকেন।  আইমানের পিতা এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা করেন ও চাচারা সবাই প্রবাসী। আইমানের পিতা এজাহারুল হক গত ৩০ অক্টোবর দ্বিতীয় সন্তানের জনক হন। এ নিয়ে আনন্দে মেতেছিল পরিবারটি।  আইমান নিখোঁজ ও অতঃপর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ম্লান হয়ে যায় সব আনন্দ আয়োজন। নিহত আইমান বোয়ালখালী পৌরসভার পূর্ব গোমদন্ডী দরপপাড়া বদরুছ মেহের চেয়ারম্যান বাড়ির এজাহারুল হকের ছেলে।