শিক্ষা

সাম্প্রতিক চাকরির ভাইভায় যেসব প্রশ্ন করা হতে পারে


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

দেশে পুরোদমে বিভিন্ন পদে সরকারি চাকরির পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সামনে আরো হবে। এসব ভাইভা ফেইস করার ব্যাপারে কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে সে ব্যাপারে একটু ধারণা দেওয়ার জন্যই এ পোস্ট। লেখাটি সাধারণ চাকরির ভাইভার জন্যই বেশি প্রযোজ্য, বিসিএসের জন্য নয়।

১. আপনাকে ভাইভাতে ডাকা হয়েছে রিটেন পরীক্ষার রেজাল্টের ভিত্তিতে। তারপরও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন ভাইভাতেও রিপিট করা হতে পারে। এমনকি কোনো প্রশ্নের উত্তর আবার লিখতেও দেওয়া হতে পারে। এটা সাধারণত করা হয়, লিখিত পরীক্ষায় কোনো অসদুপায় অবলম্বন করা হয়নি এটা নিশ্চিত করার জন্য।

২. বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করে সেখানকার বিশেষত্ব বা বিখ্যাত ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন প্রায় অবধারিত। এলাকার ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকলে তাও জিজ্ঞেস করা হতে পারে।

৩. আরো ভালো চাকরি পেলে চলে যাবেন কিনা জিজ্ঞেস করা হতে পারে। এক্ষেত্রে সঠিক উত্তর দেওয়াই ভালো। ভবিষ্যতে চলে যাবে এজন্য ভাইভা বোর্ড কাউকে বাদ দেয় বলে শুনিনি।

৪. মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন অবধারিত। বিশেষ করে যে মাসে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে তার যদি আলাদা গুরুত্ব থাকে, যেমন ডিসেম্বর মাস, তাহলে তার গুরুত্ব আলাদাভাবে জিজ্ঞেস করা হতে পারে।

৫. মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাক্রম আলোচনায় আসতে পারে।

৬. কোনো কোনো বিখ্যাত ব্যক্তি সম্পর্কে দুয়েক মিনিট বলা হতে পারে।

৭. কেন চাকরি দরকার তা জিজ্ঞেস করা হতে পারে। এখন কিছু করছেন কিনা তা জিজ্ঞেস করার সম্ভাবনা আছে। এক্ষেত্রে সঠিক উত্তর দেওয়া উচিত। প্রসঙ্গক্রমে বাবা কী করেন, বাড়িতে কে কে আছেন তা জানতে চাওয়া হতে পারে।

৮. করোনা নিয়ে প্রশ্ন আসবেই। করোনার অভিজ্ঞতা, এর স্বাস্থ্যবিধি, করোনা হলে করণীয় কী এগুলো নিয়ে জিজ্ঞেস করা হতে পারে। তাছাড়া, পৃথিবীতে কিংবা বাংলাদেশে কতজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, কতজন মারা গেছেন, করোনা ভ্যাকসিনের নাম, এদের উৎপাদনকারী দেশের নাম, এসব ব্যাপারেও প্রশ্ন করা হতে পারে।

৯. যে ডিপার্টমেন্টে পরীক্ষা সেটির ব্যাপারে কী ধারণা আছে তা জানতে চাওয়া স্বাভাবিক।

১০. সাহিত্য নিয়ে প্রশ্ন হতে পারে, তবে তা রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাশ এদের নিয়েই বেশি প্রশ্ন করা হয়। বিখ্যাত বইয়ের লেখকের নাম জানতে চাওয়া হতে পারে। যেমন ‘বিষাদ সিন্ধু’, ‘গীতাঞ্জলি।

১১. মহান স্বাধীনতার বর্ষপূর্তি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশত বর্ষ নিয়ে প্রশ্ন আসা খুব স্বাভাবিক।

১২. দেশের মেগা প্রকল্প, অর্থনৈতিক অবস্থা এগুলো নিয়ে প্রশ্ন করা খুবই স্বাভাবিক।

১৩. বাংলাদেশ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নও করা হয়। যেমন,
ক. বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির নাম কী?
খ. জাতির জনক কে?
গ. এ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কত?
১৪. বিশ্বরাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। এক্ষেত্রে আফগানিস্তান/মধ্যপ্রাচ্য প্রসঙ্গ আসার সম্ভাবনা বেশি। তবে সাধারণ সরকারি চাকরির ভাইভাতে বিদেশ প্রসঙ্গ কম আসে।
১৫. যার যার শিক্ষাগত ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে প্রশ্ন হতে পারে। যিনি ইতিহাস নিয়ে পড়েছেন, তাঁকে ইতিহাস নিয়ে প্রশ্ন করা হতে পারে। গাণিতিক প্রশ্ন তেমন করতে আমি দেখিনি, তবে গণিত/ পরিসংখ্যান বিষয়ক দপ্তর হলে আলাদা কথা।
১৬. বিবিএ বা এমবিএ- এর শিক্ষার্থীদের কর্পোরেট সেক্টর বাদ দিয়ে সরকারি চাকরিতে কেন আসবেন তা অবশ্যই জিজ্ঞেস করার মতো বিষয়।
১৭.পরিবেশ নিয়ে জিজ্ঞেস করার সম্ভাবনা প্রবল।
১৮. গার্মেন্টস শিল্পের ব্যাপারেও ধারণা নিয়ে যাবেন, এ বিষয়ে প্রশ্ন করার সম্ভাবনা প্রবল।
১৯. যেদিন ভাইভা সেদিন বা তার কাছাকাছি সময়ে দেশে কোনো আলোচিত ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হতে পারে, তবে এক্ষেত্রে ইতিবাচক ব্যাপার নিয়েই আলোচনা করা হয়। ভাইভা বোর্ডে নেতিবাচক সংবাদ সাধারণত টানা হয় না।
২০. এসব ভাইভা সাধারণত দীর্ঘ হয় না। তাই সংক্ষিপ্ত প্রশ্নই করার সম্ভাবনা বেশি।
২১. ভাইভাতে যেকোনো ভদ্রোচিত পোশাক, যেমন, শার্ট-প্যান্ট, শাড়ি, সেলোয়ার কামিজ পরে যাওয়া উচিত।
২২. কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে সরাসরি তা স্বীকার করে নেওয়াই ভালো।
২৩. পদের গুরুত্বের উপর প্রশ্নের ওজন নির্ভর করে।
২৪. নিয়োগ পেলে কতটুকু নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করবেন এটা জিজ্ঞেস করা হতে পারে।
২৫. এ পোস্ট শুধুমাত্র ধারণা দেওয়ার জন্য, এর বাইরে থেকে যে প্রশ্ন আসবে না তার গ্যারান্টি নেই।
সবশেষে একটি কথা বলি, যত নেতিবাচক ধারণাই থাকুক না কেন, আমি কিন্তু প্রচুর নিয়োগ দেখেছি যেগুলো স্বচ্ছ ছিল। তাই শুরুতেই নিরাশ না হওয়াই ভালো। আরেকটি কথা, সবাইকে চাকরি দিতে না পারলেও ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা সাধারণত খুব সহমর্মী হন। তাই তাঁদের অযথা ভয় পেয়ে নার্ভাস হওয়ার দরকার নেই।
#আসুন মায়া ছড়াই

লেখক : মানবতার সেবক