জাতীয়

সেই মিমের দায়িত্ব নিলেন ব্যারিস্টার আহসান


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

সম্প্রতি পদ্মায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় বাবা-মা ও দুই বোনকে হারানো শিশু মিমের দায়িত্ব নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভূঁইয়া। বুধবার (৫ মে) ভোরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে বিষয়টি জানান এই আইনজীবী।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘মিম এর থাকা-খাওয়া, জামা-কাপড়, শিক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন এবং সুন্দর মানসিক ও পুষ্টিকর শারীরিক বিকশের জন্য যাবতীয় দায়িত্ব নেয়ার প্রাথমিক সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি। বর্তমানে সে তার নানা-নানির সাথে আছে। যেহেতু তারাই এখন তার গার্ডিয়ান, তাই এখনি তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়। তবে তার নানা-নানির বয়স, আর্থিক সচ্ছলতা এবং তার সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় তাকে যত দ্রুত সম্ভব ঢাকায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া করছি।

তিনি আরো লিখেছেন, তেরখাজা উপজেলার ইএনও আবিদা সুলতানার সাথে কথা হয়েছে। তিনি শীঘ্রই অত্র এলাকার উপজেলা চেয়ারম্যান এবং এলাকার গণ্যমান্য বাক্তিদের সাথে পরামর্শক্রমে এই বিষয়ে আমাকে সহযোগিতা করবেন জানিয়েছেন। অত্র এলাকার এমপি মহোদয়ের সাথে আজকে এই বিষয়ে কথা হবে। উদ্ধারকৃত শিবচর এলাকার মাননীয় এমপি লিটন চৌধুরী জানিয়েছেন আমি যদি সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেই তাহলে তিনিও মিমকে দ্রুত ঢাকায় আনার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।’

মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে আহসান হাবিব বলেন, ‘মুহূর্তের দুর্ঘটনায় আট বছর বয়সী মেয়েটির জীবন সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে! তবে আল্লাহ্‌ সহায় থাকলে, তার একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারবো ইনশাল্লাহ। আমার ইচ্ছে তাকে একটি ভালো স্কুলে পড়ানো এবং ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠানো। অনেকেই তাকে দত্তক নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে যোগাযোগ করছেন। যদি আমার থেকে ভালো অপশন পাওয়া যায় তাহলে আইনগত পক্রিয়ায় সেই ব্যবস্থাও করবো তার নানা-নানির অনুমতি সাপেক্ষে, অন্যথায় সকল দায়িত্ব আমাদের পরিবর্তন করি ফাউন্ডেশনের পক্ষে আমিই পালন করবো ইনশাল্লাহ।’

ছোট্ট শিশুটির পাশে দাঁড়াতে তাকে যারা সহায়তা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনায় উপস্থিত হয়ে মিমকে সাহায্য করা, তার বাবা-মার লাশ দাফনে সহযোগিতা করা এবং আমাকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার জন্য শিবচর উপজেলার ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যমুনা টিভিকে ধন্যবাদ এই ধরনের একটি মানবিক সংবাদ প্রচার করার জন্য এবং ধন্যবাদ যারা ওই ভিডিওর কমেন্টে আমাকে ট্যাগ করে ও মেসেজে ভিডিওটি পাঠিয়ে সহযোগিতা করেছেন।’

‘দীর্ঘমেয়াদী একটা সিদ্ধান্ত নিলাম। সবাই দোয়া করবেন মিম এর জন্য।’

এবারই প্রথম নয়। তরুণ এই আইনজীবী এর আগেও বিপদগ্রস্ত এক রিকশাচালককে ব্যবসার জন্য অর্থ সহায়তা করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে পদ্মায় স্পিডবোট ডুবিতে বাবা-মা ও দুই বোনকে হারিয়ে

ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় শিশু মিম। দুর্ঘটনার পর নদীতে একটি ব্যাগ ধরে ভাসছিল সে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। ওই দুর্ঘটনায় মিমের বাবা মনির হোসেন, মা হেনা বেগম, ছোট দুই বোন সুমি (৫) ও রুমির (৩) মৃত্যু হয়। তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

উদ্ধারের পর দ্রুত তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গত ৩ মে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি স্পিডবোট শরিয়তপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটের কাছে এসে নোঙর করে রাখা একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ৫ জন।