স্বাস্থ্য

হঠাৎ আপনার মুখ বেঁকে গেলে যা করবেন


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

অনন্যার বয়স ২৫ বছর। প্রতিদিনের মতো সকালে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে আয়নার সামনে ব্রাশ করতে গিয়ে তিনি দেখলেন, তার ঠোঁট দুটো কেমন যেন বেঁকে গেছে। আগের রাতেও সব কিছু স্বাভাবিক ছিল, কোথাও কোনো আঘাত পেয়েছে বলেও মনে পড়ছে না। অনুভব করলেন বাঁমপাশটা কিছুটা অবশ। তবে কোনো ব্যথা নেই। তিনি ভাবলেন হয়তো তন্দ্রাভাব থাকায় এমনটি মনে হচ্ছে অথবা আয়নায় সমস্যা। এদিক-সেদিক দেখে বুঝতে আর বাকি রইল না এটা তার শারীরিক সমস্যাই।

এটা এক ধরনের স্নায়বিক সমস্যা বা স্নায়ুরোগ, যা ফেসিয়াল পলসি নামে পরিচিত। অনেক ক্ষেত্রে এটিকে বেলস পলসিও বলা হয়- যখন বেলস সাইন পজিটিভ থাকে। আমাদের শরীরে মোট ১২ জোড়া করোটিকা স্নায়ু থাকে। এর ৭ নম্বর স্নায়ু জোড়ার নাম ফেসিয়াল নার্ভ। এ নার্ভ বা স্নায়ুটির প্যারালাইসিস হলে বলা হয় ফেসিয়াল পলসি।

কারণ : স্ট্রোক, টিউমারসহ নানা কারণে এটা হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর কারণ জানা যায় না।

লক্ষণ : ঠোঁট দুটো বিপরীত দিকে বেঁকে যায়। আক্রান্ত অংশের চোখ পুরোপুরি বন্ধ হয় না, কিছুটা বা পুরোটাই খোলা থাকে। পানি খাওয়ার সময় আক্রান্ত অংশের ঠোঁটের কোণা দিয়ে পানি পড়ে যায়। শিস দিতে পারেন না। মুখ ফোলালে বাতাস বেরিয়ে যায় এবং আক্রান্ত অংশ ফোলে না। আক্রান্ত অংশে অনুভূতি কমে যায়। জিহ্বার সামনের অংশে স্বাদ কমে যেতে পারে।

চিকিৎসা : এ ধরনের রোগ এমনিতেই ভালো হয়ে যেতে পারে। সাধারণত তিন মাস লাগে সারতে। কখনো তা না সেরে জটিল হয়ে যেতে এবং চিরস্থায়ী হতে পারে। তাই বিন্দুমাত্র অবহেলা না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। শুধু ওষুধে এ রোগ সারে না। এর পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি ও নির্দিষ্ট ব্যায়াম অত্যাবশ্যকীয়। চিকিৎসকরা রোগের সঠিক ইতিহাস জেনে এবং শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগ শনাক্ত করার পর প্রয়োজনীয় সঠিক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।

এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাল-জাতীয় ওষুধ ও স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ বয়সভেদে নির্দিষ্ট মাত্রায় দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে চিকিৎসা নির্ভর করে কত দ্রুত অভিজ্ঞ ও সঠিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন, এর ওপর। মুখের মাংসপেশির নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম রোগ নিরাময়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ। স্ট্র বা পাইপ দিয়ে পানি খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়- যাতে মুখের মাংসপেশির শক্তি বাড়ে। চুইংগাম চিবিয়ে ব্যায়াম করতে বলা হয়। চোখ বন্ধ করতে না পারলে দিনের বেলা সানগ্লাস ও রাতে আইপ্যাড ব্যবহার করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা যে কোনো রোগের জটিলতা কমায়।

লেখক : নিউরোলজিস্ট, ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক, উত্তরা (ইউনিট-০১), রোড-১২, সেক্টর-৬, উত্তরা, ঢাকা। ০১৭৬৬৬৬২৬০৬