জাতীয়

১০০ কি.মি. পথ পেরিয়ে ঘরের বাঘ ফিরলো ঘরেই


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

কোনো বাধাই তাকে বাঁধতে পারেনি। ১০০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ‘ঘরে ফিরলেন’ ঘরের বাঘ। বাঘের বাচ্চা হয়ত একেই বলে। নদী, জঙ্গল, দ্বীপ কিছুই বাধা হয়নি তার কাছে। তাই ১০০ কিলোমিটারের বেশি পথ, তিনটি দ্বীপ, একাধিক নদী, বড় বড় জঙ্গল পার হয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে এসেছে একটি পুরুষ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। তবে একদিনে যায়নি সে। প্রায় তিন মাস সময় নিয়েছে। গতকাল ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার বাংলা অনলাইন সংস্করণ এই সময়ে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

বাঘের গতিবিধির ওপরে নজর রাখার জন্য গলায় পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল রেডিও কুলার। সে কোন দিকে যায়, তার কি গতিবিধি সেটা দেখার জন্যই পশ্চিমবঙ্গের বন বিভাগের কর্মীরা ওই রেডিও কলার পরিয়ে দিয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন ভি কে যাদবের মতে, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে রেডিও কলার পরিহিত ওই পুরুষ বাঘটি বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশ সুন্দরবনেই অবস্থান করেছে।

No description available.

তিনি জানিয়েছেন, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হরিণভাঙ্গা থেকে বাসিরহাট রেঞ্জের অন্তর্গত হরিখালী শিবিরের সামনের দিকে ধরা বাঘটিকে ধরা হয়েছিল এবং গত ২৭ ডিসেম্বর স্যাটেলাইট কলার পরিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দিন ভারতের এলাকায় ঘুরে বাঘটি তালপট্টি দ্বীপে প্রবেশ শুরু করে এবং বাংলাদেশের সুন্দরবন এবং ছোট হরিখালী, বড় হরিখালী এবং এমনকি রায়মঙ্গলের মতো নদীগুলো পেরিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবনে এসে পৌঁছায়। তিনি জানান যে ১১ মে ওই বাঘটি রেডিও কলার সংকেত দেওয়া বন্ধ করে দেয়। তার আগে বাঘটি পশ্চিমবঙ্গের হরিণভাঙ্গা, খাতুয়াঝুরি এবং বাংলাদেশের তালপট্টি দ্বীপ অতিক্রম করে। তাছাড়া বাঘটির শেষ অবস্থান ছিল সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে।

ওই বাঘটিকে যে রেডিও কলার পরানো হয় তার থেকে এখন কোনো সংকেত না এলেও সেটি যে মারা গিয়েছে সেটা ভাবার কারণ এখনই নেই বলেও জানান বন বিভাগের কর্মকর্তারা। ‘গ্যাজেটে একটি মৃত্যুর সেন্সরও ছিল, যা বাঘের মৃত্যু ঘটলে সংকেত দেয়। কিন্তু তা হয়নি। আমরা কলার থেকে কোনো স্থিতিশীল সংকেতও পাইনি, যা বাঘ নিরাপদ রয়েছে তা নির্দেশ করে। সমস্ত সম্ভাবনার মধ্যে এটাই মনে হচ্ছে কলারটি বাঘের ঘাড় থেকে খুলে পড়ে গেছে। পানির লবণাক্ততার কারণে কলারের ক্ষতিও হয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করছেন তারা।

No description available.

তবে এই বাঘটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে না আসলে বাংলাদেশের তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ, একে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এলাকাতে ধরা হলেও সেটি বাংলাদেশ থেকেই এই রাজ্যে এসেছিল এবং সেটি আবার বাংলাদেশেই ফিরে গিয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকেই। বন বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা থেকে একটি বাঘিনীকে রেডিও কুলার পরিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই বাঘটিও বঙ্গোপসাগরের প্রান্তে পৌঁছানোর জন্য চার মাসে ১০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়েছিল।