জাতীয়

আত্মহত্যার আগে ডায়েরিতে যা লিখেছিলেন এসআই হাসান

(Last Updated On: )

পাবনার আতাইকুলা থানার ছাদ থেকে উদ্ধার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান আলীর মৃত্যু মূলত আত্মহত্যা বলে দাবি করছে পুলিশ। নিজের পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করেছিলেন এই পুলিশ সদস্য। চাকরিতে যোগদানের দেড় মাস পর গত ২১ মার্চ থানার ছাদ থেকে তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।

মৃত্যুর আগে লিখে যাওয়া হাসানের একটি ডায়রি পাওয়া গেছে। যেখানে তিনি অব্যক্ত বেদনার অনেক কথা লিখে গেছেন। এসআই হাসানের বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। তিনি ৩৭তম আউটসাইট ক্যাডেট হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন।

মৃত্যুর আগে হাসান নিজের ডায়েরিতে লিখেছেন, ‘আমি কখনো ভালো অফিসার হবো না। আমি বাঁকা অফিসার। আমি Negative, বেয়াদব, মুখে মুখে তর্ক করি। Special power নিয়ে ভর্তি হয়েছি। আমি over smart…।

মৃত্যুর আগে বাবা, মা চাচার সঙ্গেও কথা বলেন এসআই হাসান। কেশবপুর কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী হাসানের বোন মুক্তা। তিনি জানান, তার ভাই মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে তার বাবা চাচাদের দেনা পরিশোধ করতে বলেন। আর ল্যাপটপটি তাকে দিতে বলেন। এই ছিল ভাইয়ের সঙ্গে তার শেষ কথা।

মুক্তা আরও জানান, গত ২২ মার্চ যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তাদের পরিবারকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হাসানের হাতে লেখা ডায়েরির কিছু পাতা দেখানো হয়। সেই ডায়েরিতে হাসান আলীর হাতে লেখা ১০ পাতা শনাক্ত করেন মুক্তা।

হাসান আলীর জীবনের কিছু খণ্ডিত অংশ লেখা আছে ডায়েরির ওই ১০টি পাতায়। সেখানে আরও লেখা আছে, তার পরিবার খুবই অসচ্ছল। বাড়িতে লেখাপড়া করার মতো পরিবেশ কখনোই ছিল না। তিনি তার পরিবারের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া। তিনি তার পরিবারকে আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা করতেন।

ডায়েরির কয়েকটি স্থানে এসআই হাসান বারবার লিখেছেন, ‘আমি আর পারছি না সহ্য করতে। শুধু মনে হচ্ছে মুক্তি চাই এই পৃথিবী থেকে। তবে এটাই আমার শেষ চাওয়া আমি কারো ভিক্ষা নিয়ে জীবন ধারণ করতে চাই না। পৃথিবী থেকে মুক্তি চাই।’

হাসান আলীর আত্মহত্যার কারণ তদন্ত করছেন মো. মাসুদ আলম। তিনি পাবনা পুলিশ সুপারের তদন্ত দলের প্রধান। মাসুদ জানান, তদন্তের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে হাসান আলীর পরিবারদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।