সম্প্রতি টলিউড অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভারতের ত্রিপুরা, মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করেন তিনি। একই অভিযোগে এবার এই নায়িকাকে যৌনকর্মী বললেন পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুরের বিজেপি সংসদ সদস্য সৌমিত্র খাঁ।
বিধানসভার নির্বাচনের অংশ হিসেবে পূর্ব বর্ধমানে এক সভার আয়োজন করে বিজেপি। এ সময় সায়নী ঘোষকে উদ্দেশ্য করে সৌমিত্র খাঁ বলেন—তৃণমূলের চাকরের মতো কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রী বলছে যে, দুর্গা পূজার অষ্টমীর দিন গরুর মাংস খাওয়াবে। আমরা যে যার ধর্মে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমাদের শিবলিঙ্গকে যারা অপমান করেছে, আমাদের মা মনসাকে যারা অপমান করে, তারাই অরিজিনাল যৌনকর্মী বলে মনে করি।
এর আগে তথাগত রায় তার টুইটারে অভিযোগপত্রের একটি ছবি পোস্ট করেন। তাতে জানা যায়, ২০১৫ সালে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ তার টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি গ্রাফিক শেয়ার করেছিলেন। এটি শিবলিঙ্গের ছবি ছিল। তাতে কন্ডোম পরাচ্ছে এক নারী। গ্রাফিক থেকে বোঝা যাচ্ছে, মহিলাকে এইডস সচেতনতার বিজ্ঞাপনের ম্যাসকট ‘বুলাদি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রাফিকের ভেতরে লেখা, ‘বুলাদির শিবরাত্রি’। ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘এর থেকে বেশি কার্যকরী হতে পারেন না ঈশ্বর।’
মূলত এই টুইটকে কেন্দ্র করে আলোচনায় উঠে এসেছেন সায়নী ঘোষ। যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন সায়নী ঘোষ। এক টুইটে তিনি জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল। অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করার পর তিনি এই ছবি সরিয়ে ফেলেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কখনো কারো ধর্মকে তিনি আঘাত করতে চাননি। তার ভাষায়, ‘আমি আগেই বলেছি যে, ২০১৫ সালের টুইটটির বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম। যেই মুহূর্তে সেটি আমার নজরে আসে সঙ্গে সঙ্গে আমি তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে টুইটটি ডিলিট করি। এতদিন পর বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যে বিদ্বেষের সম্মুখীন আমাকে হতে হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
টেলিভিশন নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে নাম লেখান সায়নী। তিনি একজন সংগীতশিল্পীও। ২০১০ সালে ‘নটবর নট আউট’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় পা রাখেন তিনি। পরের বছরই রাজ চক্রবর্তীর ‘শত্রু’ সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ পান। তবে রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘কানামাছি’ সিনেমায় প্রথম কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
সায়নী অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো—‘অলিক সুখ’, ‘গল্প হলেও সত্যি’, ‘একলা চলো’, ‘মায়ের বিয়ে’, ‘রাজকাহিনি’, ‘ব্যোমকেশ ও চিড়িয়াখানা’, ‘মেঘনাধ বধ রহস্য’, ‘কিরিটি রায়’, ‘কে তুমি নন্দিনী’ প্রভৃতি। এছাড়া বেশ কিছু ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন সায়নী।