চট্টগ্রাম

গলাকাটা বাণিজ্যে কক্সবাজার : ৮০০ টাকার কাপল রুম ৮০০০ টাকা

(Last Updated On: )

কক্সবাজারে টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। হোটেল-মোটেল খালি না থাকায় অনেকে পর্যটক সৈকত ও সড়কে পায়চারি করছেন।

পর্যটনের ভরা মৌসুমে বিজয় দিবসকে সামনে রেখে কক্সবাজারে আবাসিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রেস্তোরাঁগুলো গলাকাটা বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। আবাসিক হোটেলগুলোতে রুম ভাড়ার তালিকা টানানোর নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না মালিকরা।

কক্সবাজারে ছোট-বড় সবমিলিয়ে চার শতাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও কটেজগ্রলোতে চলছে এমন নৈরাজ্য। তবুও নিশ্চুপ বিচ ম্যানেজমেন্ট ও ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষ। তাদের তেমন কোনো তৎপরতা নেই বললেই চলে। এতে পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল জোন কলাতলিতে ঘুরে পর্যটকদের কাছ থেকে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। পর্যটকরা বলছেন, অন্যান্য দিনগুলোতে একটি রুমের ভাড়া যত নেওয়া হয়, এখন তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

খুলনা থেকে বেড়াতে আসা লাকী ও এহসান দম্পতি বলেন, আমরা খুলনা থেকে এসে কলাতলির সি-সান হোটেলে একটি নন-এসি রুম নিয়েছি। এই রুমের জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষ প্রথমে সাত হাজার টাকা দাবি করে। অনেক অনুরোধের পর আমাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। অন্য সময়ে নেওয়া হয় মাত্র এক হাজার টাকা। এসব গলাকাটা বাণিজ্য বন্ধে জেলা প্রশাসনের কঠোর হওয়া দরকার।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক সাইফুল হক জানান, সি-পার্ক হোটেলে একটি নন-এসি কাপল রুম চাচ্ছে ৮ হাজার টাকা, যা অন্য সময়ে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা দিয়ে পাওয়া যায়। এদিকে আমারী রিসোর্ট নামে একটি হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কাপল রুম ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৮-১০ হাজার টাকা করে। একই অবস্থা কক্সবাজারের সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল আর কটেজগুলোতে।

জানতে চাইলে গেস্ট হাউসের ম্যানেজার আতাউর রহমান মোল্লা বলেন, আমাদের কোনো নির্ধারিত ভাড়া নেই। আজ রুম ভাড়া বেশি। পর্যটক বেশি থাকায় আজকে তিন হাজার টাকা করে নন-এসি রুম ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। দু-একদিন পরে এই ভাড়া কমে যাবে। অন্যদিকে সি-সান রিসোর্টের কর্মকর্তা মো. আরিফের কাছে ভাড়া নির্ধারিত করা কি-না জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে হোটেলে রুম না পেয়ে ব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে অবস্থান করছেন বালিয়াড়িতে। আবার অনেক পর্যটক অবস্থান করছেন সাগরতীরে। ভ্রমণে এসে অনেক পর্যটক হোটেল রুমের জন্য ঘুরছেন। পর্যটকদের অভিযোগ, তারা হয়রানি শিকার হচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের কাছে যেসব হোটেল-মোটেল মালিক অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন, তাদের সতর্ক করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুরাদ চৌধুরী বলেন, পর্যটকদের কাছে রুম ভাড়া বেশি নেওয়ার বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ পাচ্ছি। তবে কোনো পর্যটক সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।