চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে ৯৩ শতাংশের নমুনায় ডেলটা ধরন পাওয়া গেছে বলে একটি গবেষণায় জানা গেছে। গবেষণায় দেখা যায়, চট্টগ্রামে শহরের পাশাপাশি গ্রামেও সমান দাপটে করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণ চলছে। ‘কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ন’ শীর্ষক চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় ১ থেকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে চট্টগ্রামে করোনায় সংক্রমিত ২১ থেকে ৭৪ বছর বয়সী ৩০ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাঁদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী। রোগীদের মধ্যে অর্ধেক গ্রামের, বাকি অর্ধেক শহরের বাসিন্দা।
গবেষক ও চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণে রোগীর অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটছে এবং মৃত্যুর হারও বাড়ছে। মানুষের মধ্যে করোনার স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা সংক্রমণ বিস্তারে ভূমিকা রাখছে।
সিভাসু উপাচার্য গৌতম বুদ্ধ দাশের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি হয়। তিনি বলেন, গবেষণার জন্য সংগৃহীত ৩০টি নমুনার মধ্যে ২৮টি ডেলটা ধরন হিসেবে শনাক্ত হয়, যা মোট নমুনার ৯৩ শতাংশ। বাকি দুটি নমুনার মধ্যে একটি আলফা (যুক্তরাজ্য) ধরন। অপরটি চীনের উহানে শনাক্ত ধরন।
গবেষকেরা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করেন। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) পরীক্ষাগারের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. সেলিম খান ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোরশেদ হাসান সরকার গবেষণায় জিনোম সিকোয়েন্সে সহযোগিতা করেন।
গবেষকেরা জানান, সীমান্তবর্তী জেলার পর ঢাকা অঞ্চলের নমুনায় ডেলটা ধরন দেখা যায়। পরে তা সারা দেশে ছড়ায়। জুলাই মাস থেকে মূলত ডেলটা ধরন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশের অন্যান্য এলাকার মতো চট্টগ্রামে এখনো ডেলটা ধরনের দাপট চলছে। প্রতিনিয়ত সংক্রমণ বাড়ছে।
চট্টগ্রামের কোভিড-১৯ বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জেনারেল হাসপাতালের করোনা বিভাগের মুখপাত্র ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. আবদুর রব বলেন, ‘ডেলটা ধরনের কারণে রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপ হচ্ছে। এ ছাড়া রোগীদের মৃত্যু বৃদ্ধির জন্যও এই ধরন দায়ী।’
চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনায় এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে জুলাই মাসে মারা গেছেন ২৬১ জন, যা অতীতের যেকোনো মাসের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি।