পাকিস্তানি শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাস যুদ্ধ এবং বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয় ও স্বাধীনতা। তবে তারও আগে দখলদার পাকিস্তান চালায় ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতা। শেষ অংশে তাদের বরণ করতে হয়েছিল লজ্জাজনক পরাজয়। নিজেদের কুকর্মই যদি পাকিস্তান তুলে ধরে সেলুলয়েড পর্দায়- তাহলে কেমন হবে?
তবে এতটা না হলেও পাকিস্তানের বাণিজ্যিক ধারার সিনেমায় প্রথমবারের মতো ‘ইতিবাচকভাবে’ তুলে ধরা হচ্ছে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ। ধারণা করা হচ্ছে তেমনটাই।
আগামী ১৯ নভেম্বর মুক্তি পাবে ‘খেল খেল ম্যায়’ নামের সিনেমাটি গত ৩০ অক্টোবর এসেছে এর প্রথম টিজার। যা দেখে কিছুটা হলেও আঁচ করা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের ইতিহাসে ‘অন্যরকম’ একটি সিনেমা মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
সিনেমার প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন সজল আলি ও বিলাল আব্বাস খান। তারা দুজনই দেশটির জনপ্রিয় তারকা। এর গল্প লিখেছেন ফিজা আলি, মীর্জা ও নাবীল কুরেশি। এর প্রযোজকও ফিজা। আর পরিচালনায় আছেন নাবীল কুরেশি। তিনি দেশটির প্রশংসিত নির্মাতাদের একজন। যিনি একজন গায়কও।
পাকিস্তানি মিডিয়ার বরাতে জানা যায়, ‘খেল খেল ম্যায়’-এ দুটি প্রজন্মকে একসঙ্গে দেখানো হয়। একটি প্রজন্ম যারা বাংলাদেশির বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালিয়েছিল।
সেটির পর পাকিস্তানে বাংলাদেশিদের নিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মিথ্যাচার চালানো হয়েছে। বর্তমান প্রজন্ম আসল সত্যটা জানতে চায়।

এর প্রতিফলনও দেখা যায়, ৩০ অক্টোবর প্রকাশিত টিজারে। ভিডিওর শুরুতেই এক বৃদ্ধের কণ্ঠে ‘অনুতাপ’ ভেসে ওঠে। তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝতেই পারিনি একটা স্ফুলিঙ্গ একটা জঙ্গল শেষ করে দিতে পারে।’
আর শেষে সজল আলির তার বন্ধুদের বলতে থাকেন, ‘কেন আমরা প্রশ্ন করি না? কেন একটি মিথ্যাকে আমাদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে? কেউ কেন প্রশ্ন করে না, আসলেই সেই সময়ে কী হয়েছিল? নাকি আমরা সেই চালের মধ্যে ফেঁসে গেছি, যা দুশমনরা চাইতো?’
সিনেমাটিতে বর্তমান প্রজন্ম হিসেবে দেখানো হবে কিছু শিক্ষার্থীদের। যারা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত। তাদের একজন নায়িকা সজল আলি। গল্পে তিনি বাংলাদেশে আসার ঘটনা দেখানো। এছাড়া সিনেমার বেশ কিছু দৃশ্যধারণ হয়েছে ঢাকাতে। যার বেশিরভাগই ড্রোন ব্যবহার করে।
তবে বাংলাদেশে বিদেশি শিল্পীদের শুটিংয়ের জন্য অনুমোদন প্রয়োজন হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাকিস্তানের কোনো প্রযোজক যোগাযোগ করেনি। মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র বিভাগের দায়িত্বে থাকা উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ‘খেল খেল ম্যায়’ সিনেমাটির বিষয়ে তিনি অবগত নন।