জাতীয়

পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি টাকা দুর্নীতির মামলা

(Last Updated On: )

রাজশাহীর কেশরহাট পৌরসভার মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুজ্জামান শহিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। মেয়র শহীদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাজশাহীর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত ও জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করেছেন ওই পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক। গত ৬ মার্চ তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে মামলাটি দায়ের করেন। আজ মঙ্গলবার মামলার একটি কপি আমাদের সময়ের হাতে এসেছে।

মামলায় এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কেশরহাট পৌর মেয়র শহীদ দায়িত্ব পালনের সময় বিধি বিধান, নিয়মনীতি এবং নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পৌরসভার বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাত করেছেন। এডিপি প্রদত্ত পৌরসভার আর্থসামাজিক উন্নয়নে ২০১৬-২০১৭ থেকে গত অর্থবছর পর্যন্ত প্রতি অর্থবছরে মোট ২৬ লাখ টাকা টেন্ডারের মাধ্যমে ব্যয় হওয়ার কথা থাকলেও মেয়র টেন্ডার আহ্বায়ন করেননি। তিনি ভুয়া কোটেশন দেখিয়ে ইচ্ছেমত বিল ভাউচার বানিয়ে তা সম্পূর্ণ আত্মসাত করেছেন।

কেশরহাটের ইজারা মূল্য এবং স্থানীয় সাবরেজিষ্ট্রি অফিস থেকে পাওয়া অর্থ ও হোল্ডিং ট্যাক্স হতে ১ কোটি টাকার বেশি অর্থ আদায় হলেও সে অর্থ কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে নামে বেনামে বিভিন্ন ভুয়া বিল ভাউচার দাখিল করে অধিকাংশ অর্থ আত্মসাত করেছেন। এ ছাড়া পৌরসভার উন্নয়নে সরকার থেকে বরাদ্দ দেওয়া ৫০ লাখ টাকা পৌরসভার বঞ্চিত ও অবহেলিত আপামর জনসাধারণের উন্নয়নে ব্যয়ের কথা থাকলেও সে খাতে ব্যয় না করে নিজ অফিসের কথিত সাজসজ্জায় বিল ভাউচার ছাড়াই খরচ দেখিয়ে আত্মসাত করেছেন। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীন জলবায়ু ট্রাস্টের বরাদ্দ প্রায় ৩ কোটি টাকা রেজুলেশন না করে বিধিবিধান না মেনে সামান্য কিছু কাজকর্ম করে বাকি টাকা ভুয়া প্রকল্পে খরচ দেখিয়ে আত্মসাত করেছেন।

পৌরসভায় বিএমডিএফের নির্মিত দ্বিতল ভবনের প্রায় শতাধিক ঘর কোনো রেজুলেশন ও নিয়মনীতি ছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তিকে বরাদ্দ প্রদান করে প্রায় ৩ কোটি টাকা পৌরসভার কোষাগারে জমা প্রদান না করে আত্মসাত করেছেন। অপরদিকে পৌরসভায় কোনো প্রয়োজন ছাড়া ১১জন পরিছন্নতাকর্মী নিয়োগ দেখিয়ে তাদের বেতনভাতা বাবদ অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম জানিয়েছেন, মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র শহিদুজ্জামান শহীদের সঙ্গে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। অবৈধ সুযোগ-সুবিধা না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে কিছু ব্যক্তি কুৎসা রটিয়ে বেড়াচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি কেশরহাট পৌরসভার ৫ জন কাউন্সিলর মেয়র শহীদের বিরুদ্ধে সাত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন।