জাতীয়

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন বৃহস্পতিবার

(Last Updated On: )

সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, উদ্বোধন কর্মসূচিতে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, রংপুর জেলা ও সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থাকবে।

সব স্ক্রিমের জন্য মাসিক বা ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে চাঁদা পরিশোধ করতে পারবেন। এই স্কিমের আওতায় নিরবচ্ছিন্নভাবে চাঁদা পরিশোধের মাধ্যমে ৬০ বছর পূর্তিতে আজীবন মাসিক হারে পেনশন পাবেন। স্কিমের চাঁদাদাতা মারা গেলে তার বৈধ এক বা একাধিক নমিনি ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত পেনশন পাবেন। সর্বজনীন পেনশনের আওতায় মোট চারটি স্কিম থাকবে- প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা।

প্রবাস: প্রবাস স্কিমে মাসিক চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, ৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০ হাজার টাকা। বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক তার ইচ্ছা অনুযায়ী এর যে কোনো পরিমাণ চাঁদা বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করে প্রবাস স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। প্রবাস থেকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করলে দেশীয় মুদ্রায় চাঁদা পরিশোধ করতে পারবেন কিংবা প্রয়োজনে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন। পেনশন স্কিমের মেয়াদ পূর্তিতে প্রবাস স্কিমের পেনশনারদের দেশীয় মুদ্রায় পেনশন দেবে সরকার।

১৮ বছর বয়সে প্রবাস স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হয়ে ৪২ বছর ধরে প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা হারে চাঁদা দিলে ৬০ বছর বয়স থেকে প্রতিমাসে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৭২ টাকা করে পেনশন পাবেন। মাসে ৭ হাজার ৫০০ টাকা হারে ৪২ বছর চাঁদা দিলে প্রতিমাসে মিলবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৯১ টাকা এবং প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা দিলে ৬০ বছর বয়স থেকে প্রতিমাসে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৫ টাকা করে আজীবন পেনশন পাবেন।

প্রগতি: দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি বা ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক নির্ধারিত হারে চাঁদা দিয়ে ‘প্রগতি’ স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। এই স্কিমে মাসিক চাঁদার পরিমাণ ২ হাজার টাকা, ৩ হাজার টাকা এবং ৫ হাজার টাকা। কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাদের কর্মচারীদের জন্য এই স্কিমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার ৫০ শতাংশ কর্মী এবং বাকি ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বহন করবে। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ না করলেও ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মী নিজ উদ্যোগে এককভাবে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

প্রগতি স্কিমে অংশগ্রহণকারী, অর্থাৎ বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীরা ১৮ বছর বয়সে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে ৪২ বছর ধরে মাসে ২ হাজার টাকা চাঁদা দিলে ৬০ বছর বয়স থেকে আজীবন প্রতিমাসে ৬৮ হাজার ৯৩১ টাকা পেনশন পাবেন। একইভাবে প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দিলে প্রতিমাসে ১ লাখ তিন হাজার ৩৯৬ টাকা এবং প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিলে আজীবন মাসিক ১ লাখ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা করে পেনশন পাবেন।

সুরক্ষা: অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’ নামে স্কিম থাকছে। কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতিসহ সব ধরনের অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত ব্যক্তিরা এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। এই স্কিমে মাসিক চাঁদার পরিমাণ ১ হাজার টাকা, ২ হাজার টাকা, ৩ হাজার টাকা এবং ৫ হাজার টাকা। সুরক্ষা ও প্রগতি স্কিমে অন্তর্ভুক্তরা একই পরিমাণ চাঁদা দিলে তাদের মাসিক পেনশনের পরিমাণও সমান হবে। তবে এই স্কিমে প্রগতি স্কিমের মতো মাসে ২ হাজার টাকা চাঁদা দেওয়ার সক্ষমতা না থাকায় সুরক্ষা স্কিমে সর্বনিম্ন চাঁদার পরিমাণ ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সুরক্ষা স্কিমে ৪২ বছর ধরে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে চাঁদা দিলে ৬০ বছর বয়স থেকে মাসে ৩৪ হাজার ৪৬৫ টাকা করে পেনশন পাওয়া যাবে। আর ২ হাজার টাকা করে দিলে পাওয়া যাবে মাসে ৬৮ হাজার ৯৩১ টাকা। আর ৩ হাজার টাকা করে রাখলে প্রতিমাসে পাওয়া যাবে ১ লাখ তিন হাজার ৩৯৬ টাকা। প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিলে আজীবন মাসিক ১ লাখ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা করে পেনশন পাবেন।

সমতা: অতি দরিদ্রদের জন্য ‘সমতা’ নামে পেনশন স্কিম থাকছে। এই স্কিমে চাঁদার পরিমাণ মাসে ১ হাজার টাকা। এর মধ্যে চাঁদাদাতা প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে দেবেন। বাকি ৫০০ টাকা সরকার পরিশোধ করবে। সময়ে সময়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত হাউসহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভে অনুযায়ী অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার ভিত্তিতে যাদের নিজস্ব আয় দ্বারা জীবনধারণের ন্যূনতম উপকরণ জোগাড় করা সম্ভব না, তারা এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।