বিনোদন

পরীমনির মদের লাইসেন্সের মেয়াদ ছিল না


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার ১৩ মাস আগেই মদ খাওয়ার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল ঢাকাই সিনেমার আলোচিত ও সমালোচিত নায়িকা শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনির। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় হালের এ নায়িকাসহ চারজনের বিরুদ্ধে গেল ৪ অক্টোবর ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা। সেখানেই পরীমনির মদের লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণের বিষয়টি উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আজ রবিবার সেই চার্জশিট আদালতে উপস্থাপন করা হবে। পরীমনি তখন উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

রাজধানীর বনানীতে পরীমনির বাসায় গত ৪ আগস্ট বিকালে অভিযান চালিয়েছিল র‌্যাব। ওই সময় বাসা থেকে ১৯ বোতলে সাড়ে ১৮ লিটার বিদেশি মদ, চার গ্রাম আইস, এক সøট এলএসডি নামক মাদক জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় নায়িকাকে। পরে ওই ঘটনায় র‌্যাব ১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়- র‌্যাব ১-এর সদস্যরা গত ৪ আগস্ট গুলশান এক নম্বর গোলচত্বরে অবস্থান করছিলেন। বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপুর মাধ্যমে বিদেশি মদ সংগ্রহ করে নিজের বাসায় মজুদ রেখেছেন পরীমনি। এখন তারা বাসাতেই অবস্থান করছেন। পরে বনানীর ১২ নম্বর রোডের ওই বাসার পঞ্চমতলায় অভিযান চালিয়ে শয়নকক্ষ থেকে পরীমনিকে আটক করা হয়। এর পর ওই কক্ষের একটি কাঠের ফ্রেমের ভেতর থেকে জব্দ করা হয় বিদেশি মদ। এ ছাড়া একটি সাদা জিপারে রাখা চার গ্রাম আইস বা ক্রিস্টালমেথ এবং এক ব্লট এলএসডি মাদকও জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাদকের আনুমানিক বাজারমূল্য ২ লাখ ৭ হাজার টাকা। পরীমনি এসব মাদক কবির নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সংগ্রহ করে বাসায় রাখতেন। ওই মামলায় আবার এও বলা হয়েছিল- চিত্রনায়িকা পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের কাছ থেকে মদ সংগ্রহ করতেন।

অন্যদিকে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসা থেকে জব্দ হওয়া মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। তদন্তকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর লিখিতভাবে জানিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামীয় মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়, যার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ৩০ জুন। ‘অবৈধ’ মাদকদ্রব্য সংগ্রহের বিষয়ে চার্জশিটে বলা হয়- পরীমনি বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দকৃত ওই মাদক আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এ ছাড়া জব্দকৃত গাড়িটিও মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন পরীমনি। আর সেই গাড়িটি তিনি ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে কেনেন।

এদিকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনের আলোকে চার্জশিটে বলা হয়, সাতটি বোতলে রাখা তরল পদার্থের মধ্যে অ্যালকোহলের মাত্রা যথাক্রমে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ, ১২ দশমিক ৩ শতাংশ, ১২ দশমিক ৬ শতাংশ, ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, ১২ দশমিক ১ শতাংশ, ১৫ দশমিক ২ শতাংশ ও ১১ দশমিক ২ শতাংশ। আর কাগজের প্যাকেটে রাখা দানাদার পদার্থ আইসে ‘মেথামফিটামিন’ মাদক রয়েছে। আর ব্লাটার পেপারে ‘এলএসডি’ মাদক পাওয়া গেছে।

পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী বলেন, ‘চার্জশিট রবিবার (আজ) আদালতে উপস্থাপন হবে। পরীমনিও আদালতে উপস্থিত থাকবেন। তবে আমরা এখনো চার্জশিট দেখতে পারিনি। তাই এটি নিয়ে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।’

পরীমনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর কয়েক দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর পর গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ তাকে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন দেন। প্রায় এক মাস কারাগারে থাকা এই নায়িকা গত ১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পান।

এর আগে গত জুনে ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। মামলাটি ঢাকার একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। এরই মধ্যে মারধর ও যৌন নিপীড়নের বিষয়ে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম এবং তুহিন সিদ্দিকী ওরফে অমির বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ।