Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )
জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ স্বীকৃতিদাতা নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের সিনেটর লুইস সেপুলভেদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিবাহবিচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলাকালীন স্ত্রীকে শ্বাসরোধের চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
২০১৫ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লুইস সেপুলভেদা জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ উল্লেখ করে রেজুলেশন পাস করিয়েছিলেন। নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে তিনি ‘লুইস ভাই’ হিসেবে পরিচিত। গত শনিবার (৯ জানুয়ারি) নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস এয়াকায় নিজ বাড়িতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন তিনি। স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এনওয়াইপিডি-র গোয়েন্দা বিভাগের একটি সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
এনওয়াইপিডি-র গোয়েন্দা বিভাগের মুখপাত্র সোফিয়া ম্যাসন জানিয়েছেন, লুইস সেপুলভেদা (৫৬) গুরুতর অপরাধ করেছেন। পারিবারিক বিবাদের পর শনিবার ভোর ৫ টা ৪৫ মিনিটে সেপুলভেদার ব্রঙ্কসের বাড়ি থেকে পুলিশকে কল করা হয়। সেপুলভেদা এবং তার চল্লিশ বছর বয়স্কা স্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে লাঞ্ছনার অভিযোগ করেন।
ডেমোক্র্যাট দলের সিনেটর লুইস সেপুলভেদা ২০১৮ সাল থেকে ব্রঙ্কসের একটি অংশের প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন। মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের পর রাজ্য সিনেটের অপরাধের শিকার, অপরাধ ও সংশোধন কমিটির সভাপতির পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিগগির অন্যান্য দায়িত্ব থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।
তবে অভিযোগটিকে মিথ্যা দাবি করে সেপুলভেদার আইনজীবী বলেন, ‘এটি বিবাহবিচ্ছেদ নিষ্পত্তি লাভের জন্য বাদি পক্ষের একটি অপচেষ্টা।’
গত বছর ২ নভেম্বর ফ্লোরিডার অরেঞ্জ কাউন্টিতে সেপুলভেদার স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন। সেখানে তাদের একটি বাড়িও রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। মামলায় সেপুলভেদার স্ত্রীর আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে আপতত কোনো কথা বলতে পারবেন না।
সেপলভেদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগের দ্রুত কিছু প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। বাফেলো অঞ্চল থেকে রিপাবলিকান সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা রব অর্ট সেপুলভেদার অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অবিলম্বে তাকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান।
রব অর্ট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিষয়টি আমার কাছে পরিষ্কার করে দেওয়া উচিত। আমরা কারো কাছ থেকে গৃহকর্মী সহিংসতার মতো বিষয় সহ্য করতে পারি না, বিশেষ করে আমাদের সিনেট চেম্বারের একজন স্থায়ী সদস্যও যদি এমনটা করে থাকেন।’ সেপুলভেদাকে তার কমিটির ভূমিকা থেকে প্রত্যাহার করেছেন ডেমোক্র্যাটিক মেজরিটি লিডার আন্দ্রে স্টুয়ার্ট-কাজিন্স। তিনি বলেন, ‘আমি এই অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি এবং এই পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করব।’
সিনেটর লুইস সেপুলভেদা নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটে একটি রেজুলেশন পাস করান, যেখানে জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটে জে-১০৪৮ নম্বরের রেজুলেশনটি পাস হয়।
২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর সিনেটর লুইস সেপুলভেদার নেতৃত্বে পাঁচ সিনেটর ও অপর তিন স্টাফসহ একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করেন। এদের সবাই ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য। এই পাঁচ সিনেটর নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কমিউনিটিকে বিভিন্ন বিষয়ে এবং বিভিন্নভাবে জোরালো সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে থাকেন। ওই সময় জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় সিনেটর লুইস সেপুলভেদার বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে প্রবাসে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।