স্কুল প্রাঙ্গণের মূল গেটে তালা ঝুলছে। দূর থেকে বা কাছ থেকে দেখলেও মনে হবে স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ।
কিন্তু ভেতরে এর চিত্র উল্টো। প্রতিটি রুমেই শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট কোচিং চলছে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সরকার। কিন্তু অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এ নিয়ম মানছে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের পয়াগ এ. আলীম একাডেমিতে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র। মূল ফটক বন্ধ রেখে প্রতিষ্ঠানটির পেছনের গেট দিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে নিয়মিত ক্লাস করছে। এবং কয়েকটি শ্রেণির পরীক্ষাও নেওয়া হচ্ছে। একাডেমির প্রতিটি রুমে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষকরা ক্লাস ও পরীক্ষা নিচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে একজনের সঙ্গে আরেকজন বসে আছে। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে মুহূর্তের মধ্যে সবাই চলে যেতে থাকে।
স্কুল খোলার বিষয়ে শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করলে কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন লোক বলেন, এমনিতে লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে চলার জন্য বলা হয়েছে। সে জায়গায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছে এই স্কুলের শিক্ষকরা। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি আরো বেড়ে যাচ্ছে।
স্কুল খোলা রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে এ. আলীম একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ফারুক মিয়া প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে তিনি বলেন, বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা খুবই কষ্টের মধ্যে আছে। আমরা না খেয়ে মরছি।
এদিকে শহরের ভাদুরঘর এলাকায় প্রফেসি কিন্ডার কিন্ডারগার্টেন নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কৃর্তপক্ষ। এতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্কুল কৃর্তপক্ষ নিয়মিত মাসিক বেতনসহ অন্যান্য ফিসও আদায় করে নিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিভাবক বলেন, মহামারি করোনার কারণে সরকার যখন শিক্ষার্থীদের পরিত্রাণের জন্য সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে এই সুযোগে এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ তাদের বিদ্যালয়ে আসতে বাধ্য করছেন। এবং আমাদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসিক বেতনসহ অন্যান্য ফিস আদায় করছেন। আমরা এর দ্রুত প্রতিকার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।