আন্তর্জাতিক

অভূত্থানের পর গৃহবন্দী মিয়ানমারের এমপিরা


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে গৃহবন্দি রয়েছেন দেশটির কয়েকশ আইনপ্রণেতা। অভ্যুত্থানের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও দেশটির রাষ্ট্রীয় কাউন্সেলর অং সান সু চি এবং তার সঙ্গে আটক হওয়া মন্ত্রিপরিষদের বাকি সদস্যদের অবস্থান এখনও জানা যায়নি। তবে এমপিরা নেপিদো’র আবাসিক কমপ্লেক্সেই গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এপি।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী নেপিদোদে এমপিদের তাদের সরকারি বাসভবনে বন্দী করা হয়। আগের দিন সেনারা অং সান সু চিসহ গণতন্ত্রপন্থী এনএলডির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করে।

অং সান সু চিসহ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনএলডি) শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গ্রেপ্তার করার পর এবার মিয়ানমারের পার্লামেন্টের কয়েকশ এমপিকে গৃহবন্দী করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাজধানী নেপিদোদে এমপিদের তাদের সরকারি বাসভবনে বন্দী করা হয়।

একজন এমপি জানিয়েছেন, তিনি এবং আরও প্রায় ৪০০ আইনপ্রণেতা নেপিদো-র আবাসিক কমপ্লেক্সে পরস্পরের সঙ্গে এবং ফোনে তাদের নির্বাচনি এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। তবে তাদের ওই আবাসন কমপ্লেক্স থেকে বেরুতে দেওয়া হচ্ছে না।

এমপিদের আবাসিক কমপ্লেক্সে পুলিশ ও সেনাসদস্যদের উপস্থিতির কথাও জানান এই আইনপ্রণেতা। তিনি জানান, কমপ্লেক্সের ভেতরে পুলিশ এবং বাইরে প্রহরায় রয়েছে সেনাসদস্যরা। সেখানে সু চি-র দলসহ অন্যান্য ছোটখাটো দলের এমপিদের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। জান্তা সরকার তাদেরও ধরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে; এমন শঙ্কায় নিদ্রাহীন রাত কাটছে এমপিদের।

এর আগে সোমবার আগের দিন ভোরের দিকে সু চি, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট ও এনএলডির প্রায় ৪৫ জন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে দেশটির সামরিক বাহিনী।তাদের গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা পরই মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা জারি করা হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতায় বসেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাং।

গত নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে এনএলডির কাছে সেনা-সমর্থিত ইউএসডিপির ভরাডুবির পর থেকেই মিয়ানমারে সেনা-অভ্যুত্থানের শঙ্কা তৈরি হয়। এই শঙ্কা বাস্তবে রূপ নিতে খুব বেশি সময় লাগেনি।

সংবিধান অনুযায়ী মিয়ানমারে আইন সভায় সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত ২৫ শতাংশ তথা ১৬৬টি আসন। বাকি ৪৯৮টি আসনের মধ্যে গত নির্বাচনে সেনা-সমর্থিত ইউএসডিপি পায় মাত্র ৩৩ আসন। আর সু চির এনএলডি পায় ৩৯৬ আসন, এতে নির্দিধায় টানা দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করা যেত।

এই জনরায় মেনে নেয়নি সেনাবাহিনী। শুরু থেকেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলছিল তারা। সোমবার নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের নিয়ে পার্লামেন্টের অধিবেশনের ডাক দিয়েছিল এনএলডি। কিন্তু এদিন ভোরেই সব এলোমেলো করে দেয় সেনাবাহিনী।

নভেম্বরের নির্বাচনের ফল মেনে নিতে সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিবৃতি দিয়েছে এনএলডি। সেই সঙ্গে বন্দী সবাইকে ছেড়ে দিতে বলছে তারা। দলটির ফেসবুক পেজে দেওয়া বিবৃতিটিতে বলা হয়েছে, ‘সংবিধানের বাইরে গিয়ে সেনাপ্রধান জনগণের ক্ষমতা দখল করেছে এবং মানুষের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।’

বন্দি আইনপ্রণেতাদের একজন বলেছেন, তিনি ও পার্লামেন্টের আরও ৪০০ সদস্যকে তাদের বন্দি করে রাখা হয়েছে। কম্পাউন্ডের ভেতরেই কেবল তারা একে-অপরের সঙ্গে কথা বলতে এবং ফোনে নির্বাচনি এলাকায় যোগাযোগ করতে পারছেন। কাউকে নেপিদোর ওই হাউজিং কমপ্লেক্সের বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। সু চিকে তাদের সঙ্গে রাখা হয়নি।

এই আইন প্রণেতা আরও জানিয়েছেন, কমপ্লেক্সের ভেতরে রয়েছে পুলিশ, আর বাইরে সেনাদের টহল। সু চির এনএলডিসহ ছোট ছোট অন্য দলের এমপিদের নিদ্রাহীন রাত কেটেছে।

পরিচয় গোপন করে ওই এমপি বলেন, ‘আমাদের জেগে থাকতে হয়েছে, সতর্ক থাকতে হয়েছে।’