জাতীয়

আফগানদের হারিয়ে নতুন উচ্চতায় বাংলাদেশ


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

ব্যাটে-বলে আধিপত্য দেখিয়ে আফগানিস্তানকে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হারাল বাংলাদেশ। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ ঘরে তুলল টাইগাররা।

শুধু কি তাই, আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষে উঠে এলো স্বাগতিকরা। সেই সঙ্গে প্রথম দল হিসেবে সুপার লিগে ১০০ পয়েন্টের কীর্তি গড়ল তামিমবাহিনী।

সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮৮ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করে লিটনের সেঞ্চুরি ও মুশফিকের নব্বই ছুঁইছুঁই ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩০৬ রানে। জবাবে ২১৮ রান তুলতেই সব উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানরা। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে আফগানদের বিপক্ষে একই ফরম্যাটে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল স্বাগতিকরা।

বিশাল লক্ষ্যে তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে আফগানিস্তান। প্রথম ৪ ওভারের মধ্যেই সফরকারীরা ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে। আফিফ হোসেনের সরাসরি থ্রোয়ে বিদায় নেন ওপেনার রিয়াজ আহমেদ (১)। এরপর শরিফুলের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আফগান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শহীদি (৫)। এবার দশম ওভারে সাকিব আল হাসানের স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন চারে নামা আজমতুল্লাহ ওমরজাই (৯)।

দলীয় ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারায় আফগানরা। সেখান থেকেই নজিবুল্লাহ ও রহমতের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। দুজনের জুটিতে আসে ৯০ বলে ৮৯ রান। এর মধ্যে রহমত ফিফটি তুলে নেন ৬৯ বলে। তবে পরের ওভারেই তাসকিনের বল রহমতের (৫২) স্ট্যাম্পের বেল ভেঙে দেয়। ওই ওভারেই সিরিজে টানা ফিফটি তুলে নেন নজিবুল্লাহ। ৫৭ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর অবশ্য বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। ৩ ওভার পরে সেই তাসকিনের বলেই মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬১ বলে ৫৪ রান করেন নজিবুল্লাহ।  এরপর আঘাত হানেন সাকিব। দেশসেরা অলরাউন্ডারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেছেন রহমতউল্লাহ গুরবাজ (৭)।

১৫১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর আফগানিস্তানের শেষ ভরসা হয়ে ছিলেন মোহাম্মদ নবি। রশিদ খানকে নিয়ে কিছুদূর এগিয়েও গিয়েছিলেন আফগান অলরাউন্ডার। কিন্তু বিপদজনক হয়ে ওঠার আগেই তাকে আফিফের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। নবির ব্যাট থেকে আসে ৪০ বলে ৩২ রান। এরপর ৪১তম ওভারে মোস্তাফিজের প্রথম দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকিয়ে বড় কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন রশিদ খান। কিন্তু তৃতীয় বলেই রশিদকে (২৯) ফুল কাটারে বোল্ড করে ফেরান মোস্তাফিজ। ৪৫তম ওভারে মুজিবকে (৮) বিদায় করেন মাহমুদউল্লাহ। পরের ওভারে ফারুকিকে ফিরিয়ে আফগান ইনিংস গুঁটিয়ে দেন আফিফ।

এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ধীরগতির শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। গত ম্যাচে বল হাতে চার উইকেট নেওয়া ফজল হক ফারুকির বল দেখেশুনে খেলছিলেন তারা। তবে সপ্তম ওভারে এসে আর পারলেন না তামিম। এলবিডব্লিওর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিনি। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। ২৪ বলে ১২ রান করে সাঝঘরে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক।

তামিমের বিদায়ের পর ব্যাট করতে নেমে সাকিব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ষষ্ঠদশ ওভারে রশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ২০ রান সংগ্রহ করে বিদায় নেন তিনি। এরপর ব্যাট করতে নেমে লিটনকে সঙ্গ দেন মুশফিক। দুজনের ব্যাটে রানবন্যা বয়ে যায়। ৮ চারে ৬৫ বলে অর্ধশতক তুলে নেন লিটন আর মুশফিক ফিফটির দেখা পান ৬০ বলে। ফিফটির দেখা পাওয়ার লিটনের ব্যাট আরও চওড়া হতে থাকে। ব্যক্তিগত ৮৭ রানে একবার জীবন পাওয়া এই ব্যাটার পরে সেঞ্চুরি তুলে নিতে খুব বেশি দেরি করেননি। ১০৭ বলেই ছুঁয়ে ফেলেন পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি।  

 লিটনের পর ব্যক্তিগত ৬৯ রানে আফগান উইকেটরক্ষক স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগ মিস করায় জীবন পান মুশফিকও। কিন্তু লিটন সেঞ্চুরি পেলেও মুশফিক পাননি। তবে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১৩ হাজারি ক্লাবে পা রেখেছেন তিনি। তার আগে আছেন শুধু তামিম (১৪১৭৫ রান)।  

এদিকে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দেড়শ ছোঁয়ার পথে ছিলেন লিটন দাস। কিন্তু ৪৭তম ওভারে আফগান পেসার ফরিদ আহমেদের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১২৬ বলে ১৩৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলা ডানহাতি ওপেনার। ইনিংসটি খেলার পথে ১৬টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। পরের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন সেঞ্চুরির দিকে ছুটতে থাকা মুশফিকও। ডানহাতি এই ব্যাটার ৯৩ বলে ৯ চারে ৮৬ রান করেছেন। তাদের জুটি থেমেছে ২০২ রানে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের মাত্র তৃতীয় ২০০ ছাড়ানো জুটি এটি।  ১৮৬ বলে গড়া এই জুটিই বাংলাদেশ ইনিংসের প্রাণ। শেষদিকে ৫ রানে মাহমুদউল্লাহ এবং ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন প্রথম ম্যাচের নায়ক আফিফ হোসেন।  

বল হাতে আফগানিস্তানের ফরিদ ২টি এবং ফারুকি ও রশিদ খান ১টি করে উইকেট নেন।