জাতীয়

‘ইসলামকে ব্যবহার করে এক শ্রেণির মানুষ টাকা লুট করেছে’

(Last Updated On: )

আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলামকে ব্যবহার করে এক শ্রেণির মানুষ টাকা লুট করেছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, এদেশে যারা টাকা লুট করেছে, তাদের চেহারা দেখলে কুতুব মনে হবে, কপালে-নাকে তাদের সিজদার দাগ। তারাই এদেশের অর্থ লুট করে নিয়ে গেছে। ইনস্যুরেন্স কোম্পানির নামে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে কওমি উদ্যোক্তাদের আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব বলেন। 

বাংলাদেশ স্বাধীনের পর এদেশে আলেম-ওলামের মাধ্যমে অনেক সোসাইটি হয়েছে জানিয়েছে তিনি বলেন, অনেক এনজিও হয়েছে। অনেক বিজনেস এন্টারপ্রাইজ হয়েছে কিন্তু টিকে থাকতে পারিনি। বহু মানুষ বিশ্বাস করে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, এখন তারা দেউলিয়া। বিভিন্ন নামে ইসলামিক ইনস্যুরেন্স কোম্পানি রয়েছে। আলেম-ওলামাদের মাধ্যমে ইসলামিক ইনস্যুরেন্সের কোটি কোটি টাকা লুট হয়েছে। বিভিন্ন নামে ইসলামিক ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে যারা টাকা দিয়েছে তারা শেষ। আমিও দিয়েছি, শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে বলেছি, বাবা আমার লাভের দরকার নেই, আসলটা ফেরত দাও। দশ বছর পরে আসল মাল ফেরত পেয়েছি। আজকের অবস্থানে থাকলে তো তাকে ধরে নিয়ে জেলে দিয়ে দিতাম। এগুলো হচ্ছে প্রতারণা। ধর্মকে ব্যবহার করে প্রতারণা করা।’

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বহু প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও। অনেক আলেম সাদাসিধে মানুষকে বোঝাচ্ছেন যেখানে টাকা দিলে সুদমুক্ত লাভ পাওয়া যাবে, ওখানে দিলে সুদযুক্ত লাভ পাওয়া যাবে। ওইটা হারাম, এটা হালাল। হাজার হাজার মানুষ টাকা বিনিয়োগ করেছে।

তিনি আরও বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আলেমদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার যে চেতনা, ব্যবসা করার যে প্রয়াস এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমরা ছোট ইনভেস্ট করতে পারি, আস্তে আস্তে বড় হব। আলেম-ওলামায়েদের ভেতরে যেহেতু তাকওয়া আছে, তারা বিজনেসের ভেতর কোনরকম অনৈতিকতা করবেন না, ভেজাল করবেন না, ওজনে কম দেবেন না, মাপে কম দেবেন না। তাহলে বাজারে বিশুদ্ধ জিনিস, সলিট জিনিস পাওয়া যাবে।

কওমি উদ্যোক্তার ফাউন্ডার মাওলানা রোকন রাইয়ানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন রহিম আফরোজ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিয়াজ রহিম, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক এবং ইংলিশ থেরাপির ফাউন্ডার ও সিইও সাইফুল ইসলাম, বিক্রয় বন্ধু রাজীব আহমেদ, অনলাইন টেক একাডেমির ফাউন্ডার মুজতাহিদুল ইসলাম, হ্যাপিনেস কোচ কাঞ্চন এবং উইট ইনস্টিটিউটের ফাউন্ডার ও সিইও নাজিব রাফে। 

কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলনটি যৌথভাবে সঞ্চালনায় করেন কামরুজ্জামান সুমন ও আবু সালেহ আহমদ। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা রোকন রাইয়ান বলেন, ‘কওমি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল অবহেলিত উদ্যোক্তাদের জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। আজকের এই সম্মেলনে প্রায় ২৫০০ উদ্যোক্তার উপস্থিতি প্রমাণ করে, আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি। ভবিষ্যতে এই প্ল্যাটফর্ম আরও বড় পরিসরে কাজ করবে ইনশাআল্লাহ।’

অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন কওমি উদ্যোক্তার কো-ফাউন্ডার মুমিনুল ইসলাম। তিনি অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানিয়ে কওমি উদ্যোক্তার লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।