চট্টগ্রাম

কাউন্সিলর জসিমকে গ্রেফতারে ৭২ ঘন্টা আল্টিমেটাম!


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আকবরশাহ ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমকে গ্রেফতার করা না হলে, প্রয়োজনে সড়ক অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন মাদক, সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও পরিবেশ সুক্ষা আন্দোলন, আকবরশাহ কমিটি।

আজ রবিবার ( ৯ এপ্রিল) বেলা ১২ টায় নগরের আকবরশাহ এলাকার পরিবেশ অধিদপ্তরের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ আল্টিমেটাম দেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

তারা আকবরশাহ কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমকে ওই এলাকার পাহাড় কাটা, ছড়া-খাল দখল-ভরাট ও পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনার মূল হোতা বলে দাবী করে অনতিবিলম্বে এই পাহাড়খেকোকে গ্রেফতার করে তার বাহিনী ও তাকে সহযোগিতাকারী প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

মানববন্ধনে অংশ নেয় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও আমরা আকবরশাহবাসীসহ স্থানীয় হাজারো মানুষ। পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (মহানগর) হিল্লোল বিশ্বাসকে স্মারকলিপি দেন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিগত ১০ বছর আগেও এই আকবরশাহ পাহাড়-ছড়া-খালের সুনিপুন পর্যটন কেন্দ্র ছিল। পরিবেশ ছিল স্বস্তিদায়ক। চট্টগ্রাম নগরের পার্বত্য এলাকা হিসেবে আকবরশাহ ছিল নন্দিত।

কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কাউন্সিলর জসিম ও তার বাহিনীর সরাসরি অংশগ্রহণে এবং প্রশাসনের কতিপয় কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে আজ এখানকার অসংখ্য পাহাড় নিশ্চিহ্ন।

সবোচ্চ বিচার বিভাগের নিষেধাজ্ঞা, কয়েকটি রীট আবেদনের প্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এবং জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরের আদেশ-নিষেধ অমান্য করে, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে এবং অর্জনকে অসম্মান করে এই ভূমিদুস্য ও অসংখ্য অপরাধের হোতা জহুরুল আলম জসিম এসব পরিবেশ বিধ্বংসী অপকর্ম করে যাচ্ছে।

সে সরকারি কালীর ছড়া খাল দখল করে গরুর খামার তৈরির পাশাপাশি প্লট আকারে খালের জায়গা বিক্রি করেছে। গণপূর্ত, রেল ও জেলা প্রশাসনের তথা সরকারি খাসজমি দখল করে দোকান, মার্কেট, বস্তি, কলোনী তৈরি করে এলাকায় রাম-রাজত্ব করেছে।

অস্ত্রবাজী, চাঁদাবাজি, লুটপাটসহ নানান অপরাধ সুনিপুনভাবে করতে এবং বিরোধী মতের মানুষদের মুখ বন্ধ করতে পরিচালনা করছে কোপা বাহিনী, ছুরি বাহিনী, অস্ত্র বাহিনী, কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী গ্রুপ। ছোট ছোট উঠতি কিশোর-তরুণদের এসব কাজে সে ব্যবহার করছে।

তার নির্দেশনায় পাহাড় কেটে বসতি নির্মাণ করে বিক্রি করে দেয়ার ফলে গত বছর বর্ষা মৌসুমে একই পরিবারের ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু সবাইকে নাড়া দিয়েছিল। প্রশাসন তদন্ত করে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

অবৈধভাবে বিদ্যুৎ, পানি সংযোগ দিয়ে পাহাড়ে মানুষ বসানোর অপরাধেও সে জড়িত বলে আমরা পত্র-পত্রিকায় জেনেছি। মাত্র ৭-১০ বছরে এক সময়ের দরিদ্র এই জসিম কিভাবে আজ হাজার কোটি টাকার মালিক সে বিষয়েও পত্র-পত্রিকাগুলো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সর্বশেষ জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিটি কর্পোরেশনকে ব্যবহার করে অনৈতিকভাবে ব্যক্তি মালিকানা জায়গার উপর দিয়ে অবৈধ রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে ধসের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ১ জনের মৃত্যু ও ৪ জন আহত হয়েছেন।

এর দায়ে কেন তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা হলো না তা আকবরশাহবাসী জানতে চায়। বারংবার আকবরশাহকে দেশবাসীর কাছে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের প্রধান কারণ এই ব্যক্তি।

মিথ্যা তথ্য দিয়ে, সিটি কর্পোরেশনকে ব্যবহার করে আকবরশাহ’য় যে অবরাধ কাণ্ড জসিম করে যাচ্ছে তার এখনই প্রতিরোধ প্রয়োজন। তার এসব অপকর্মে বারংবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে দলেরর এবং সরকারের যে অর্জন তা প্রশ্নবিদ্ধ করছে এই ব্যক্তি।

তাকে আগামি ৭২ ঘন্টার মধ্যে যদি গ্রেপ্তার করা না হয়, আমরা প্রয়োজনে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি দিব। আমরা অনতিবিলম্বে এই পাহাড়খেকোকে গ্রেপ্তার করে তার বাহিনী ও তাকে সহযোগিতাকারী প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে একাত্মতা ঘোষণা করে অংশ নেন ও বক্তব্য রাখেন উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্যবৃন্দ এবং আকবরশাহ থানা ও পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকবৃন্দসহ অপরাপর নেতৃবৃন্দ।

মাদক সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার মোর্শেদ কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাড. জামাল উদ্দিন, সদস্যসচিব কাজী আলতাফ হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদ মামুন, মহিলা কাউন্সিলর নুরজাহান বেগম রুবি, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) চট্টগ্রাম প্রধান মুনিরা রুবা, মাদক সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. লোকমান আলী, সদস্য সাহাবুদ্দিন আহমেদ জাহেদ, মোজাফ্ফর আহমেদ মাসুম, আব্দুল জব্বার, নিয়াজ আহমেদ, রুবেল ভান্ডারি, মিলি চৌধুরী, সবিতা বিশ্বাস, মো. জিয়াউল হক সুমন, মো. আবুল কাসেম, হাজী মোহাম্মদ ইউসুফ, দেলোয়ার হোসেন, জামাল আহমেদ, আবু সুফিয়ান, মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, শফিকুল ইসলাম মানিক, দিপ্তী রক্ষিত, জাহানারা বেগম রুজি, শর্মিষ্ঠা সেন, মো. রুবেল, মো. মানিক, রফিকুল ইসলাম টিটু, মো. সোহেল, মো. শামীম, মো. হানিফ সুমন, মো. হেলাল, মো. সাজ্জাদ, সাজ্জাদ মামুনসহ এলাকার বিভিন্নস্তরের হাজারো নারী-পুরুষ সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।