চট্টগ্রাম

চাক্তাই ভেড়া মার্কেট বস্তি : এক মাসের উচ্ছেদ ৮ মাসেও হয়নি


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

চাক্তাই ভেড়া মার্কেট বস্তির ৪৭ দখলদারকে এক মাসের মধ্যে অবৈধ দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে দখল ছেড়ে না দিলে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও দখলদারের বিরুদ্ধে মামলারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল নোটিশে। কিন্তু ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করতে পারেনি জেলা প্রশাসক। উপরন্তু অবৈধ দখলদার বেড়েই চলেছে।


২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ওই বস্তিতে আগুন লেগে নারী ও শিশুসহ আটজন নিহত হয়েছিল। এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটিও সরকারি খাস জমি দখলমুক্ত করার সুপারিশ করেছিল।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সদর সার্কেলের এসি ল্যান্ডের (সহকারী কমিশনার ভূমি) প্রতিবেদন না পাওয়ায় উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের কারণে উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, ‘নোটিশ যখন জারি করা হয়েছে, তা উচ্ছেদ করা হবে।’
জেলা প্রশাসনের জারি করা নোটিশে দেখা যায়, গত বছরের (২০২০ সাল) ২০ ডিসেম্বর তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন ভেড়া মার্কেট বস্তির ৪৭ অবৈধ দখলদারকে দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য উচ্ছেদ নোটিশ দেন। ২৩ ডিসেম্বর সদর সার্কেলের সেই সময়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন চন্দ্র রায় অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেন। অবৈধ দখলদারদের মধ্যে বহুল আলোচিত জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি, পুলিশ বক্সের (কাঁচা ঘর), সাবেক কাউন্সিলর ও কয়েকজন ব্যবসায়ীর নামও রয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ৪ আগস্ট সদর সার্কেলের এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসক। নোটিশ পাওয়া ৩০ দিনের মধ্যে সরকারি জায়গা খালি করার

নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় খাস জমিতে অবস্থিত ইমারত উচ্ছেদ করে সরকারি জমি দখলমুক্ত করা হবে। একই সঙ্গে দখলদারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও দায়ের করা হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ভেড়া মার্কেট বস্তিতে ৩০ একর খাস জমি দখল করা হয়েছে। টিনশেড, সেমিপাকা ঘর ও শুঁটকির মাচাং রয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, উচ্ছেদ নোটিশ জারির সময়সীমা অতিক্রম হওয়ার পর তিন দিনের মধ্যে জমি দখল বুঝে নেওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসককে অবহিত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনারকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি খাস জমি দখল করে বেড়া মার্কেট বস্তি গড়ে ওঠেছে। এ অবৈধ বস্তিতে পাঁচ হাজার ছিন্নমূল মানুষের বসবাস ছিল। ৪৭ জন ব্যক্তি সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। অবৈধ দখলদারের হাত থেকে মূল্যবান জমি উদ্ধার করে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার সুপারিশ করেছিল তদন্ত কমিটি। কর্ণফুলী নদীর রাজাখালী খালের তীর দখল করে ভেড়া মার্কেট এলাকায় বিশাল এ বস্তি গড়ে ওঠে।
অভিযোগ রয়েছে, ভেড়া মার্কেট বস্তিতে দীর্ঘদিন ধরে মদ-জুয়ার আসর থেকে শুরু করে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে আসছে। এই সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রক ছিলেন আকতার হোসেন প্রকাশ কসাই আকতার। এই সাম্রাজ্য থেকে আকতার প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকার অবৈধ আয় ছিল। আকতার ছিলেন ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি। গত বছরের ১৭ অক্টোবর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বস্তিতে খুন হন আবু তৈয়ব নামে এক মাঝি। চাঁদা না দেওয়ায় আকতাদের নির্দেশে বেধড়ক পিটুনি ও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে তাকে খুন করা হয়েছিল বলে দাবি তার স্বজনদের। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার হন আকতার ও তার সহযোগীরা।