পটিয়ার কুসুমপুরায় চাঞ্চল্যকর গৃহবধু চুমকি হত্যা মামলার তদন্তভার এবার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বেশর সিংহ পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে দায়িত্বভার অর্পন করেছেন বলে জানা গেছে। ইতিপূর্বে তিনি তা পিবিআইকে দিয়েছেলেন। বর্তমানে মামলার বাদী চুমকির পিতা গোলাম মোস্তফা পিবিআইয়ের প্রতিবেদনের বিরুদ্বে নারাজী দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে তা গত ২১ অক্টোবর পুন: তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এ আদেশ দেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী মো. ফোরকান উদ্দিন ।
জানা যায়, গত ১৪ নভেম্বর ১৮ইং পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের বিনিনিহারা গ্রামে বোয়ালখালী উপজেলার গোলাম মোস্তফা মেম্বারের একমাত্র কন্যা জুবাইয়ের মোস্তফা চুমকিকে হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে লাগিয়ে লাশ ফ্যানে ঝুলিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে তার পিতা থানায় অভিযোগ করেন। এতে ঘটনাটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড না হওয়ায় তিনি পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৮ নভেম্বর ১৮ইং একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতে বিষয়টির শুনানী শেষে ১ কার্যদিবসের মধ্যে মামলাটি গ্রহণ করে আদালতকে অবহিত করার জন্য ওসি পটিয়াকে নির্দেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ১৮ নভেম্বরই এ মামলাটি পটিয়া থানায় হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। পরে পটিয়া থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ মামলার ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে দাখিল করলে এতে না-রাজী দেন বাদী গোলাম মোস্তফা। উভয় পক্ষের আইনজীবীদের শুনানী শেষে ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ইংরেজী বিজ্ঞ আদালত তা অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডি’তে প্রেরণের নিদের্শ দেন বলে পটিয়া আদালতের পিপি বদিউল আলম জানান। হত্যাকা-ের সাত মাস পর ২১ জুন ২০১৯ ইংরেজী সকাল ৮ টায় আদালতের নির্দেশে পটিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাব্বির রহমান সানির উপস্থিতিতে ময়না তদন্তের জন্য কুসুমপুরা ইউনিয়নের বিনিনিহারা গ্রামের কবর থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নুরুল হাকিম। চুমকির শ্বশুর বাড়ির কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়। দীর্ঘ ১ বছর ৬ মাস পর ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইংরেজী তারিখে আদালতে সিআইডি স্বামীকে অভিযুক্ত করে তদন্ত রির্পোট দাখিল করে। গত ২১ অক্টোবর সিআইডির তদন্তের রিরুদ্ধে ২য় দফায় নারাজি দাখিল করেন মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা মেম্বার। শুনানী শেষে উক্ত মামলা তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালত।
এতে পিবিআই স্বামী খোরশেদ আলম জুয়েল ও তৎমাতা হোসেনারা বেগম কে অভিযুক্ত করে আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে ৩২৩, ৩০৬, ৩৪ ধারায় অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। এতে বাদী গোলাম মোস্তফা মেম্বার অসন্তুষ্ট হয়ে ৪র্থ দফা নারাজী দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত দু তরফা শুনানী ক্রমে তা অধিকতর তদন্তের জন্য পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাদী গোলাম মোস্তফা জানান, আমার মেয়ের হত্যাকান্ডের সাথে শুধু এ দু,জন নয়,এজাহার ভূক্ত সকল আসামীরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত। তাই আমি এ মামলার সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে সব জড়িত আসামীর বিচার চাই। আমার ৪ বছর বয়সী নাতি হোসেন মো: আদিল এখনো মায়ের অভাব অনুভব করে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। এ শিশুর দিকে তাকিয়ে হলে ও এ নৃশংস হত্যার সঠিক তদন্তনিশ্চিত্ব করার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি ও ডিআইজি এবং চট্রগ্রাম পুলিশ সুপার সহ প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে মানবিক আবেদন জানান তিনি ।