জাতীয়

চা শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

১২০ টাকার বদলে ৩০০ টাকা মজুরি দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন হবিগঞ্জের চা শ্রমিকরা।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকাল থেকে শ্রমিকরা নিজ নিজ বাগানে জড়ো হয়ে মিছিল আর স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন চা বাগানগুলো। একই সঙ্গে তারা সভা সমাবেশও করছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিক নেতারা বৈঠক করে দাবি আদায়ে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

নেতাদের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ (শুক্রবার) সকালে জেলার চুনারুঘাটের চান্দপুর চা বাগানে শ্রমিকরা বিশাল সমাবেশ আয়োজন করেন। এতে অংশগ্রহণ করেন শত শত চা শ্রমিক।

সমাবেশে শ্রমিক নেতারা, দ্রুত সময়ের মধ্যে চা শ্রমিকদের বেতন ৩০০ টাকা করার জন্য বাগান মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান। দাবি না মানলে, চলমান ধর্মঘট অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেন তারা।

এদিকে ধর্মঘটের কারণে বাগানগুলোতে লাখ লাখ টাকার চা পাতা নষ্ট হচ্ছে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘আমাদের দাবি দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি। মালিকপক্ষ ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা মজুরি দিতে রাজি হয়েছে। আমরা এ প্রস্তাব মেনে নেইনি। শ্রমিকরা আন্দোলনের যে পর্যায়ে আছেন, সেখান থেকে ফেরা কঠিন। তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে, সেখান থেকে মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা আসা ছাড়া ফেরা যাবে না।’

জানা গেছে, ৩০০ টাকা মজুরি আদায়ে গত ৯ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত দৈনিক দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন হবিগঞ্জের চা বাগানগুলোর শ্রমিকরা। গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের ১০ জন শ্রমিক নেতার সঙ্গে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসলেও আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি।

শনিবার (১৩ আগস্ট) থেকে টানা ধর্মঘটের ডাক দেন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে শ্রীমঙ্গলে আসেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী। তিনি ধর্মঘট স্থগিত করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানালে চা শ্রমিক ইউনিয়ন তা প্রত্যাখান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

গত বুধবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনে চা-বাগান মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরীর বৈঠক হয়। সন্ধ্যায় ৬টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় রাত ১১টায়। চা শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে প্রায় ৫ ঘণ্টার মতো ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পরও কোনো সমঝোতা হয়নি।

চা বাগান সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাট, মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার ৭০৩.২৪ হেক্টর জমিতে ২৫টি ফ্যাক্টরিযুক্ত চা বাগান রয়েছে। এছাড়া ফাঁড়িসহ প্রায় ৪১টি বাগানের প্রায় প্রতি হেক্টর জমিতে ২২-২৫ শ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়। এসব বাগানে বছরে ১ কোটি ৩০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়ে থাকে।

উল্লেখ্য, ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি এবং গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট করছেন চা-শ্রমিকেরা।