বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের টিকা নিবন্ধনের সুরক্ষা অ্যাপ ও ওয়েব পোর্টালে সাইবার হামলা হয়েছে। যদিও সাইটটির নিরাপত্তাবলয় ভাঙার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে হামলাকারীরা। পরে তারা অতিরিক্ত ক্লিক বা হিট বেশি করে সাইটটি ভারসাম্যহীন করার চেষ্টা করে। এ সময় টিকা নিবন্ধনে সাময়িক বিঘœ ঘটলেও সুরক্ষা ওয়েবসাইট ও অ্যাপকে অকার্যকর করা যায়নি। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, সুরক্ষা সাইট ও অ্যাপটিকে অকার্যকর করার জন্য হামলাকারীরা ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ৪ কোটিবার
এতে ক্লিক করেছে। যা সাইটের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ক্লিক। মূলত ২০ দেশের অবকাঠামো ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়েছে। তবে জিও ফেন্সিং বা ভূ-বেড়া চালু করে দেশের বাইরে থেকে আসা অস্বাভাবিক হিট বন্ধ করা গেছে। আক্রমণের মূল পরিকল্পনাকারীদের শনাক্তে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বিসিসি পরিচালক (সিএ অপারেশন ও নিরাপত্তা) তারেক এম বরকতউল্লাহ।
বিসিসি সূত্র বলছে, কোন কোন দেশ থেকে সাইবার সন্ত্রাসীরা ওই হামলা চালিয়েছে তা ওয়েবসাইটের ট্রাফিক সিস্টেমে ধরা পড়েছে। তবে কারা কেনো কী উদ্দেশ্যে এসব হামলা চালিয়েছে তা এখনো অজানা। তবে সুরক্ষা অ্যাপের সেবাকে বাধাগ্রস্ত করা, অ্যাপটি অচল করে দেওয়া, তথ্য চুরি করা, বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলা, মুক্তিপণ দাবিসহ একাধিক কারণে এ হামলা চালানো হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বারবার সাইবার হামলার ঘটনা ঘটলেও তা দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে বাংলাদেশ। এতে টিকা নিবন্ধনে সাময়িক বিঘœ ঘটলেও সুরক্ষা ওয়েবসাইট ও অ্যাপকে অকার্যকর করে দিতে পারেনি সাইবার সন্ত্রাসীরা। হাতিয়ে নিতে পারেনি নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষায় দেওয়া তিন কোটির বেশি নাগরিকের তথ্য।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ বলছেÑ বাংলাদেশ, হাঙ্গেরি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ভারত ও ফিলিপাইন থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে, যা ইন্টারনেটের ট্রাফিক সিস্টেমে ধরা পড়েছে। তারেক এম বরকতউল্লাহ বলেন, ‘গণটিকার ক্যাম্পেইনের সময় আক্রমণটা শুরু হয়। তখন আমাদের সক্ষমতার চেয়ে বেশি হিট আসছিল। এতে আমাদের যারা ব্যবহারকারী তারা সিস্টেমটা ধীরে পাচ্ছিলেন এবং এসএমএস আসতে দেরি হচ্ছিল। কিন্তু তারা (হ্যাকাররা) আমাদের নিরাপত্তা প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেদ করতে পারেনি। আমরা বিষয়টির সমাধান করেছি। হিটের সক্ষমতা প্রতি সেকেন্ডে ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে লাখ করা হয়েছে। জিও ফেন্সিং (ভূ-বেড়া) চালু করে দেশের বাইরের অস্বাভাবিক হিট বন্ধ করা গেছে।
