Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )
‘শাহবাগে গতকাল শুক্রবার শিক্ষার্থীদের ওপর হওয়া হামলার বিচার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে’ বিক্ষোভ করেছে গণসংহতি আন্দোলনের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। বিক্ষোভ শেষে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাতিল ঘোষণা করে এর প্রতি ‘বৃদ্ধাঙ্গুলি’ প্রদর্শন করেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।
লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর প্রতিবাদ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করতে গেলে শাহবাগে পুলিশের সঙ্গে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, তাঁদের যৌক্তিক আন্দোলনে পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ করেছে।
এর প্রতিবাদে আজ বেলা সোয়া ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি রোকেয়া হল ও রাজু ভাস্কর্যের সামনে দিয়ে শাহবাগের দিকে যায়। শাহবাগ থানার সামনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন অর রশীদের নেতৃত্বে পুলিশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে মিনিট দুয়েকের মধ্যে পুলিশ মিছিলটিকে ছেড়ে দেয়।
পরে শাহবাগ মোড় ঘুরে থানার সামনে দিয়ে ফের টিএসসিতে আসেন ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা। সেখানে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেন, মতপ্রকাশের জন্য আজকে টুঁটি চেপে ধরা হচ্ছে। এই বাংলাদেশ আমরা চাইনি। দেশের সর্বত্র দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবার ও মাফিয়াতন্ত্র সৃষ্টি করা হয়েছে। বাংলাদেশের সবকিছু আজ হুমকির মুখে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায় থেকে ক্রমাগত মিথ্যাচার করা হচ্ছে। মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না। মিথ্যুকদের প্রতিহত করতে হবে। মানুষের জাগরণ ছাড়া এই ভণ্ড শাসকদের রুখে দেওয়া সম্ভব নয়।
গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে আগামী এক মাস সারা দেশে সব প্রগতিশীল সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করব। ঢাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে আমরা বিক্ষোভ করব।’
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার পুলিশের হামলায় বিভিন্ন সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। সাতজনের নামে নয়টি অভিযোগ করেছে পুলিশ। এটি কণ্ঠরোধের চেষ্টা ও সংবিধান লঙ্ঘন। আজ সন্ধ্যার মধ্যে আটকদের না ছাড়া হলে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতির জন্য শাহবাগ থানার পুলিশ দায়ী থাকবে। হুঁশিয়ার করতে চাই, জনগণের কাতারে না এলে তাঁরা প্রত্যাখ্যাত হবেন।’
জাহিদ সুজন জানান, সব প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের উদ্যোগে ১ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে ও সারা দেশে বিক্ষোভ হবে৷ ৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ করবেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, লেখক মুশতাক ‘হত্যার’ সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল।
সমাবেশের শেষ দিকে ‘জনগণের পক্ষ থেকে’ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ঘোষণা করেন জাহিদ সুজন। আইনটিকে কণ্ঠরোধকারী ও নিবর্তনমূলক বলে আখ্যা দেন তিনি। পরে আইনটির প্রতি ‘বৃদ্ধাঙ্গুলি’ প্রদর্শন করেন ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক সৈকত আরিফ, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান প্রমুখ।
এদিকে লেখক মুশতাক ‘হত্যার’ তদন্ত ও বিচার, গতকালের ‘হামলার’ বিচার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে আজ দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও শাহবাগে বিক্ষোভ করার কথা রয়েছে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর। অনুষ্ঠিতব্য এই বিক্ষোভ ঠেকাতে আজ সকাল থেকেই শাহবাগ থানার সামনে মোতায়েন রয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ।