বিনোদন

তাঁরা চলচ্চিত্র অঙ্গনকে মানুষের কাছে সার্কাসে পরিণত করেছেন


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

বেশ কিছুদিন ধরেই জায়েদ খানকে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্রের ১৭টি সংগঠনের সঙ্গে শিল্পী সমিতির দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সম্প্রতি সংগঠনগুলো আবার এক ছাতার নিচে আসার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের সঙ্গে কথা বলল ‘বিনোদন’।

আপনাকে উপলক্ষ করে চলচ্চিত্রের ১৭টি সংগঠনের সঙ্গে শিল্পী সমিতির দূরত্ব বাড়ছিল। এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত কীভাবে?

কেন বা কী নিয়ে এই দূরত্ব, আমি জানি না। লিখিত কোনো কাগজও পাইনি। হাতে গোনা কটি সংগঠনের চার থেকে পাঁচজন ব্যক্তিগত স্বার্থে আমার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়েছিলেন। পরে আমার সঙ্গে সঙ্গে মিশা ভাইয়ের বিরুদ্ধেও উঠেপড়ে লেগেছিল। সম্প্রতি আমাদের মিটিংয়েও সংগঠনের নেতাদের বলেছি, আমাদের অপরাধ কী? তাঁরা সদুত্তর দিতে পারেননি। আমরা এখন এক, এতেই আমি খুশি।

এসব কর্মকাণ্ডে কখনো কি মনে হয়েছে আপনাদের সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে?

শুধু শিল্পীদের সংগঠন নয়, তাঁরা পুরোপুরি ইন্ডাস্ট্রিকে ছোট করেছেন। তাঁরা টার্গেট করে আমাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউবে লোক দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা চলচ্চিত্র অঙ্গনকে মানুষের কাছে সার্কাসে পরিণত করেছেন।

সোনার চর সিনেমার একটি দৃশ্যে জায়েদ খান, মৌসুমী, ওমর সানী
সোনার চর সিনেমার একটি দৃশ্যে জায়েদ খান, মৌসুমী, ওমর সানী

গত নির্বাচনে ওমর সানী ও মৌসুমীর সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সম্প্রতি কিছু ছবিতে দেখা গেল, আপনারা একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন। ছবিটি দেখে অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের আগে আপনারা সুসম্পর্ক তৈরি করছেন? একসঙ্গে প্যানেল করে নির্বাচনের পরিকল্পনা আছে?

নির্বাচন ও সিনেমা—দুটি দুই জায়গায়। নির্বাচন এখনো অনেক দেরি। কিন্তু কাজের সময় আমরা সবাই এক। আর সিনেমার মহরতের দিন এমনিতেই মিষ্টিমুখ করানো হয়। নির্বাচনের প্যানেল নিয়ে আমরা কিছু ভাবছি না।

দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শিল্পী সমিতির নেতা হয়ে কী কী করেছেন?

করোনার সময়ে আমরা সবার পাশে ছিলাম। আমাদের সময়ে চলচ্চিত্রশিল্পীদের জন্য একটি ট্রাস্ট আইন পাস হয়েছে। আমাদের কিছু অভিনয়শিল্পী আছেন অসচ্ছল। তাঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। তাঁদের ধ্যানজ্ঞান অভিনয়। পুরো জীবনটাই তাঁরা চলচ্চিত্রের পেছনে কাটাচ্ছেন। সরকার সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দিল, সরকারের মাধ্যমে তাঁদের মাথা গোঁজার কোনো রকম ব্যবস্থা করতে পারলে সাংগঠনিকভাবে আমরা তৃপ্তি পাব।

বিভিন্ন সময় কারণে অকারণে আলোচনা ও সমালোচানায় এসেছেন জায়েদ
বিভিন্ন সময় কারণে অকারণে আলোচনা ও সমালোচানায় এসেছেন জায়েদ

গত নির্বাচনের আগে অসচ্ছল প্রায় দুই শ শিল্পীকে আপনারা বঞ্চিত করেছেন?

আমরা কাউকে বাদ দিইনি। কার্যনির্বাহী পরিষদের সিদ্ধান্তে আমরা যাচাই–বাছাই করে কিছু শিল্পীকে পূর্ণ থেকে সহযোগী শিল্পী করেছি। কারণ, তাঁরা অনেকেই চলচ্চিত্রে একদমই নিয়মিত নন। কেউ মাছ বিক্রি করেন, সেলুনের কাজ করেন। তাঁরা অভিনয়ে নিয়মিত হলে আবার ভোটাধিকার পাবেন—এটা তাঁদের চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে। কোনো ব্যক্তিস্বার্থে নয়, যা হয়েছে সবই সংগঠনের নিয়ম মেনে। এখনো তাঁরা শিল্পী সমিতির সব সুবিধা পাচ্ছেন।

তাঁদের বাদ দেওয়া নিয়ে অমিত হাসান ফেসবুকে সম্প্রতি লিখেছেন, এটা অন্যায় হয়েছে…

শিল্পী সমিতির সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অমিত হাসান সবচেয়ে বেশি অন্যায় করেছেন। নিয়ম না মেনে তাঁদের কমিটি যাকে–তাকে সদস্য করেছে। তাঁর কাছে প্রশ্ন, যাঁরা সিনেমায় অভিনয়ই করেননি, তাঁরা কীভাবে সদস্য হন। সেই সময় সাধারণ মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত হয়। তখন অমিত হাসান উপস্থিত ছিলেন। তখন কেন এ বিষয়ে কিছু বলেননি?

করোনার কারণে সাংগঠনিকভাবে বেশি ব্যস্ত ছিলেন জায়েদ খান
করোনার কারণে সাংগঠনিকভাবে বেশি ব্যস্ত ছিলেন জায়েদ খান

দীর্ঘ দুই বছর পরে আপনি ‘সোনার চর’ সিনেমা দিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন। এই সময়ে কি কোনো ছবিতে প্রস্তাব পাননি?

করোনার কারণে সাংগঠনিকভাবে বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমি সংগঠনের হাতে গোনা কিছু মানুষের আক্রোশের শিকার হয়েছি। তাঁরা চাননি আমি অভিনয় করি। আমার প্রস্তুত থাকা ছবিও করতে পারিনি। সে কারণে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে দেরি হয়েছে।

অভিনয়ে কেন এলেন?

মা–বাবার স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হব। আমাদের বাসার পাশে সিনেমা হল ছিল। অনেক সিনেমা দেখেছি। অভিনয় দেখে শেখার চেষ্টা করতাম। আমার কাছে মনে হতো, অভিনয়টা আমাকে দিয়ে হবে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আমার স্বপ্ন আরও একধাপ এগিয়ে যায়। সবাই যখন লাইব্রেরিতে যেত, আমি তখন এফডিসির গেটে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম।

মা–বাবার স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হব
মা–বাবার স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হব

এফডিসিতে তখন কি প্রবেশ করতে পারতেন?

না। তখন অনেক ভিড় হতো। কিছু মানুষ লবিং করে ঢুকতেন। ভিড়ের মধ্যে আমি দৌড়ে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। একদিন এফডিসির এক দারোয়ান আমাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছিল। আমার ডান পায়ে এত জোরে বাড়ি মেরেছিল যে জায়গাটা ফুলে লাল হয়ে গিয়েছিল। অনেক দিন ঠিকমতো হাঁটতে পারিনি।