প্রধান পাতা

‘দুঃখ প্রকাশ’ করেও রক্ষা হলো না খালেদা জিয়ার উপদেষ্টার


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপুর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুসসহ দলের চারজন নেতার নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করেছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের কাছে আবেদনটি জমা দেয়া হয়।

আবেদনটি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, ‘আবেদন পেয়েছি। এখন পরবর্তী বিষয়গুলো দেখা হবে।’

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলার এই আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, ‘মামলার আবেদনটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া হয়েছে। তিনি অনুমোদন দিলে মামলার পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

মামলার আবেদনে আরও নাম রয়েছে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাবেক সিটি মেয়র ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন।

মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ২ মার্চ বিএনপি রাজশাহীতে বিভাগীয় সমাবেশ করে। মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের সঞ্চালনায় সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিএনপির এই চার নেতা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার উৎখাতের অসৎ উদ্দেশ্যে নেতাকর্মী, সাংবাদিক, আইনশৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতিতে মিজানুর রহমান মিনু প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘হাসিনা রেডি হও, আজ সন্ধ্যার সময়, কালকে সকাল তোমার নাও হতে পারে, মনে নাই পঁচাত্তর সাল? পচাত্তর সাল মনে নাই?’

মামলার আবেদনে আরও বলা হয়, মিজানুর রহমান মিনুর এই ঘোষণার পর বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উগ্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকজন নেতাকর্মী সমাবেশের এই বক্তব্য ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করেন। সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদুস তালুকদার দুলুসহ অন্যরাও একইভাবে বক্তব্য দিয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করেন এবং বেআইনিভাবে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকার উৎখাতের হুমকি দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাসহ নির্বাচিত সরকার উত্থাতের প্রকাশ্য ঘোষণা ও হুমকি দিয়ে তারা রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধ করেছেন। যা বাংলাদেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি বিপদজনক ও হুমকিস্বরূপ।

উল্লেখ্য, সমাবেশে আরেকটি আগস্ট ঘটানোর ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে মহানগর আওয়ামী লীগ। মিজানুর রহমান মিনুকে জাতির সামনে ক্ষমা চাইতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় আওয়ামী লীগ। নইলে মামলা করারও ঘোষণা দেয় দলটি।

আলটিমেটামের ৭২ ঘণ্টা পর মিজানুর রহমান মিনু গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।  বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমার বক্তব্যের জন্য যারা ব্যথিত হয়েছেন, মর্মাহত হয়েছেন, আমি তাদের নিকট দুঃখ প্রকাশ করছি।’

মিনু আরও বলেন, ‘আমি এই মহানগরীতে জন্মগ্রহণ করে দীর্ঘদিন রাজশাহীবাসীকে নিয়ে রাজনৈতিক নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ সকল আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। সুতরাং কোনো ব্যক্তি বিশেষ বা গোষ্ঠী বিশেষকে উদ্দেশ্য করে আক্রোশমূলক বক্তব্য প্রদান করা আমার স্বভাববহির্ভূত। তাই সকলকে আমার বক্তব্যে ষড়যন্ত্র না খোঁজার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিলেও মিজানুর রহমান মিনুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার আবেদন করেছে আওয়ামী লীগ।