প্রধান পাতা

দুই হোতাসহ আমদানি নিষিদ্ধ লাল ফেরারী গাড়ি আটক


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকা বিশেষ করে গুলশান, বারিধারা, বনানীতে পার্টি বা ডিজে পার্টির নামে নিয়মিত বসানো হতো মাদকের আসর। এসব পার্টিতে অংশ নিতেন পিয়াসা-মৌদের মতো অর্ধশত ‘মডেল’। এরা পার্টিতে অংশ নেয়া অভিজাত শ্রেনির লোকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি ও ভিডিও তুলে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে তিন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব মডেলের নাম-পরিচয় জেনেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

এই ‘মডেল’ ও টিভি কর্মীদেরকে টাকার বিনিময়ে ব্যবহার করতো শরফুল হাসান বা মিশু হাসান। দেশের বাইরে দুবাই বা ইউরোপ-আমেরিকার প্রবাসীদের জন্য এরা বিদেশে গিয়ে পার্টির ব্যবস্থা করত।

রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে অস্ত্র ও মাদকসহ শরফুল হাসান বা মিশু হাসান ও তার এক সহযোগী জিসানকে আটকের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব।

বুধবার বিকেল পৌনে ৬টায় সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পার্টির নামে মাদক সেবনসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানা যায়। র‌্যাব এ বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর অভিযানে মঙ্গলবার রাতে বসুন্ধরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মিশু হাসান ও তার জিসানকে আটক করা হয়।

এ সময় জব্দ করা হয় ১টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬ রাউন্ড গোলাবারুদ, ইয়াবা ১৩ হাজার ৩০০ পিস, একটি বিলাসবহুল ফেরারি মডেলের গাড়ি, শিশার সরঞ্জামাদি, ২টি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও এটিএম কার্ড, পাসপোর্ট এবং ভারতীয় জালমুদ্রা ৪৯ হাজার ৫০০ রুপি।

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, আটকরা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। এই চক্রের সদস্য প্রায় ১০-১২ জন। তারা রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকা বিশেষ করে গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টির নামে মাদক সেবনসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা করে থাকে। পার্টিতে তারা অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করে। অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্য।

প্রতিটি পার্টিতে ১৫-২০ জন অংশগ্রহণ করে। এছাড়া বিদেশেও প্লেজার ট্রিপের আয়োজন করা হয়। একইভাবে বড়লোক প্রবাসীদের জন্যেও দুবাই, ইউরোপ ও আমেরিকায় এ ধরনের পার্টি আয়োজন করা হয়। তারা ক্লায়েন্টদের গোপন ছবি ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়।

পার্টি আয়োজনের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের চাহিদা/পছন্দে গুরুত্ব দেয়া হতো। এই অবৈধ আয় থেকে অর্থ নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যবসায় (গাড়ির ব্যবসা, আমদানি ও গরুর ফার্ম) বিনিয়োগ করেছে মিশু হাসান ও জিসান। এই ব্যবসায় তাদের গ্রুপের সদস্যদের অবৈধ আয়েরও বিনিয়োগ রয়েছে।

র‍্যাব জানায়, আটক শরফুল হাসান বা মিশু হাসান বাংলাদেশে নামিদামি ব্রান্ডের বিলাসবহুল গাড়ির ব্যবসা করে থাকে। সে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে অনিয়ম ও ছলচাতুরির আশ্রয় নিত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। সে নিজেও দামি ব্রান্ডের গাড়ি ব্যবহার করত। তার ব্যক্তিগত ২টি রেঞ্চ রোভার, অ্যাকুয়া, ভক্স ওয়াগন ও ফেরারিসহ ৫টি গাড়ি রয়েছে। সে অত্যন্ত সুকৌশলে গাড়ির ট্যাক্স জালিয়াতি করেছে বলে প্রমাণ মিলেছে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, আটক জিসানের এলাকায় একটি গরুর ফার্ম রয়েছে। শরফুল হাসান ইতিপূর্বে বিভিন্ন মামলায় তিনবার গ্রেপ্তার হয়েছিল। তার নামে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন চিহ্নিত অপরাধীদের যোগাযোগ রয়েছে।

‘উচ্চবিত্ত শ্রেণির লোকদের টার্গেট করে আসর বসানো হতো। এই চক্রের ক্লাইয়েন্টের তালিকায় পিয়াসা-মৌসহ দেশি-বিদেশি ৫০ ক্লায়েন্টের নাম পেয়েছি। যাদেরকে বিদেশেও প্লেজার ট্রিপের আয়োজন করে পাঠানো হতো। একইভাবে উচ্চবিত্তের প্রবাসীদের জন্যেও দুবাই, ইউরোপ ও আমেরিকায় এ ধরনের পার্টি আয়োজন করে পিয়াসা-মৌদের মতো কথিত মডেলদের পাঠানো হতো।’

আটকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে, মাদক আইনে, ভারতীয় জালমুদ্রার রাখা ও অননুমোদিত গাড়ি আমদানি ও ব্যবহারে বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ আলাদা আলাদা মামলা প্রক্রিয়াধীন।