জাতীয়

দুর্গ বদলাচ্ছে হেফাজত, নেতাদের দুর্নীতির খোঁজে ১১ দপ্তরে চিঠি


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কমান্ড সেন্টার হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের হাটহাজারী। সেখানকার আল-জামিয়াতুল আহ্‌লিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকেই হেফাজত তাদের অধিকাংশ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এটি তাদের মূল দুর্গ হিসেবে চিহ্নিত। বিভিন্ন কর্মসূচিতে বারবার প্রতিষ্ঠানটির হাজার হাজার ছাত্রকে মাঠে নামিয়ে নাশকতা ও তাণ্ডব চালানো হয়েছে। সর্বশেষ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতার কর্মসূচিতে হাটহাজারী মাদ্রাসা-সংলগ্ন সড়কে দেয়াল তুলে যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছিল। বহুল আলোচিত এই মাদ্রাসা থেকে এখন নিজেদের কমান্ড সেন্টার সরাতে হচ্ছে কোণঠাসা হেফাজতকে। মাদ্রাসার বাইরে অন্য কোথাও নতুন স্থাপনা তৈরি করে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে হবে তাদের। ঠিকানা বদলের ব্যাপারে এরই মধ্যে একটি রূপরেখা নিয়ে কাজও শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্নিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তাদের। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে নেওয়া কর্মসূচি ঘিরে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে এখন পর্যন্ত সারাদেশে ১৫৪টি মামলা হয়েছে। হেফাজত নেতা মামুনুল হকসহ একের পর এক নেতাকর্মীর নানামুখী কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর চাপের মুখে পড়ে সংগঠনটি। এরপর কমিটি ভেঙে দিয়ে তড়িঘড়ি পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেয় হেফাজতের সর্বশেষ আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। এরপর নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ কয়েকটি দাবিতে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হেফাজত। তবে নাশকতায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে বন্ধ হয়নি অভিযান। সোমবার পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক হাজার ২৩০ জনকে, যাদের অধিকাংশ হেফাজতের নেতাকর্মী। হেফাজতের ঘটনায় দায়ের নতুন মামলায় এজাহারভুক্ত মোট আসামির সংখ্যা তিন হাজার ২৭০। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি ৮০ হাজারের বেশি। এখনও গ্রেপ্তারের তালিকায় রয়েছেন সংগঠনটির শীর্ষ ১৪ নেতা, যারা তাণ্ডবের ঘটনার পরপরই গা-ঢাকা দেন। হেফাজতের ২৩টি মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ছাড়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি ও গোয়েন্দা বিভাগকেও বেশ কিছু মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় হাটহাজারী থানায় দায়ের ৫১ নম্বর মামলার তদন্ত করছে পিবিআই। ওই মামলায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন হাটহাজারী পৌর হেফাজতের যুগ্ম সম্পাদক রিজওয়ান আরমান। যদিও পিবিআইর ভাষ্য- বাহ্যিকভাবে রিজওয়ান হেফাজত নেতা হলেও নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে। তিনি হুজিরও নেতা। এ ছাড়া হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আহমদ শফীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পিবিআইর দেওয়া প্রতিবেদনে অন্যতম আসামি রিজওয়ান। তার জবানবন্দি ও তদন্তে উঠে এসেছে- নরেন্দ্র মোদির সফর ঠেকাতে এক মাস আগে থেকেই সদস্যদের সংগঠিত করেন মামুনুল। এ বিষয়ে মাদ্রাসাছাত্রদের উস্কে দিতে ফেসবুক, ইমো, ভাইবার, টুইটার, হোয়াটস অ্যাপে পোস্ট দেওয়া হয়। তার উস্কানিতে হাটহাজারীতে শত শত ছাত্র মিছিল বের করে। ২৬ মার্চ হাটহাজারী থানায় পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করা হয়। আক্রমণকারীরা এসআই মো. এমরানের অস্ত্র লুট করে নেয়। হামলার পর কীভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে, এর করণীয় নিয়ে হেফাজত নেতা নাসির উদ্দিন মুনীর, মীর ইদ্রিস, আহসান উল্লাহ, জাকারিয়া নোমান, কামরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর মেহেদীসহ আরও অনেকে সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

আরেকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার ভাষ্য- জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রেখে নতুন একটি রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি নিয়ে এগোচ্ছিল হেফাজত। ওই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সম্প্রতি মামুনুলসহ হেফাজতের একাধিক নেতার মুখে বিতর্কিত রাজনৈতিক বক্তব্য শোনা যায়। বাংলাদেশের ইতিহাস, স্বাধীনতা নিয়েও বিতর্ক ছড়ায় তারা। এমনকি হেফাজতের অনেক কর্মসূচিতে সংগঠনের নেতাকর্মীরা জাতীয় পতাকা নিয়ে যাওয়ার রেওয়াজ প্রচলন করে।

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, হেফাজতের কমিটির অধিকাংশ নেতা বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছিলেন, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

হাটহাজারীতে হেফাজত এতটাই শক্তিশালী যে, সেখানে পালিয়ে থাকা কোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এখনও এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। পরিকল্পিত নাশকতার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া আইডি থেকে বিতর্কিত ইস্যু সামনে এনে পোস্ট দিয়ে আগে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ানো হয়। এরপর তাদের রাস্তায় নামায় মূল পরিকল্পনাকারী। অসত্য ও ভুয়া তথ্য দিয়ে পোস্ট দেওয়ার জন্য সেখানে আলাদা একাধিক টিম রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তা হাটহাজারীতে একটি অভিযানের অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি বলেন, হাটহাজারী মাদ্রাসা ও আশপাশের এলাকায় কোনো চিহ্নিত অপরাধী পালিয়ে থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার অভিযানের আগে ১০ বার ভাবতে হয়। কারণ, একাধিক সময় সেখানে অভিযানে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ২০১৪ সালে ভারতের বর্ধমাণে বিস্ফোরণের পর সেই ঘটনার সূত্র ধরে হাটহাজারীতে পালিয়ে থাকা এক জঙ্গির সন্ধান পায় পুলিশ। এরপর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসির) পক্ষ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সেখানে যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সরাসরি ওই জঙ্গিকে মাদ্রাসা এলাকা থেকে গ্রেপ্তারে ঝুঁকি রয়েছে। সাধারণ ছাত্রদের উস্কানি দিয়ে এটি বাধাগ্রস্ত করা হবে। এরপর মাদ্রাসা এলাকায় কয়েকদিন গোপনে ছদ্মবেশে অবস্থান করে ওই জঙ্গি কখন বাইরে আসে, এই প্রতীক্ষায় থাকেন পুলিশ সদস্যরা। তিন দিন পর বাইরে আসার পর তাকে আটক করে মাইক্রোবাসে তুলে কম্বল মুড়িয়ে রাখা হয়। এরপর দ্রুত সেই এলাকা ত্যাগ করেন পুলিশ সদস্যরা।

হেফাজত নেতা জুনায়েদ বাবুনগরীর প্রেস সচিব ও খাদেম ইনামুল হাসান ফারুকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন। সংগঠনের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি। তবে এটা স্বীকার করছেন, বিলুপ্ত কমিটির মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদীর তত্ত্বাবধানে টাকা লেনদেন করা হতো। বাবুনগরীর সঙ্গে সাক্ষাতে প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ শুভাকাঙ্ক্ষী আসতেন। তারা এক থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাদিয়া দিতেন। দৈনিক ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাদিয়া জমা পড়ত। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেন ফারুকি। ওই দিন বাবুনগরী চট্টগ্রামে একটি অনুষ্ঠানে ছিলেন। সেটি শেষ করে ফারুকির বিয়েতে হেলিকপ্টারে নোয়াখালী যান বাবুনগরী। চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত তার হেলিকপ্টার ভাড়া বহন করেন ফারুকি।

সর্বশেষ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হেফাজতের তাণ্ডবের পর এখন পর্যন্ত এক হাজার ২৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গতকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ৪৯৬ জন। সেখানে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন ৩৮ জন। গ্রেপ্তারের তালিকায় রয়েছেন সংগঠনের শীর্ষ ১৪ নেতা। তারা হলেন- হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস, কামরুল ইসলাম কাসেমী, আহসান উল্লাহ, মাহমুদুল হাসান গুণভী, আজহারুল ইসলাম, নাছির উদ্দিন মনির, আসাদুল্লাহ আসাদ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। তাদের মধ্যে অনেকে হাটহাজারীতে আত্মগোপনে আছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় জেলায় ৫৫টি মামলা হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য বিশ্নেষণ করে জড়িতদের অধিকাংশকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এদিকে জুনায়েদ বাবুনগরী ও মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ প্রায় অর্ধশত নেতার তহবিল আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে সরকারি ১১ দপ্তরে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও পটিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি), ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআইএফইউ প্রধান, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং নেত্রকোনার পুলিশ সুপার, নির্বাচন কমিশন এবং পাসপোর্ট অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো পৃথক পৃথক চিঠিতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করা হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও পটিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানো চিঠিতে হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতাদের ও তাদের পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাকৃত জমির দাগ ও খতিয়ানসহ সংশ্লিষ্ট নথি চাওয়া হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআইএফইউকে দেওয়া চিঠিতে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক হিসাবে নেতাদের নামে থাকা হিসাবের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নেত্রকোনার পুলিশ সুপার বরাবর পাঠানো চিঠিতে নেতাদের নামে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলাগুলোর এজাহারসহ সংশ্লিষ্ট নথি এবং নির্বাচন কমিশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরে পাঠানো চিঠিতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। আর চাহিদাকৃত নথিপত্র অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সংগঠনের শীর্ষ অর্ধশত নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সংগঠনের তহবিল, বিভিন্ন মাদরাসা, এতিমখানা ও ইসলামি প্রতিষ্ঠানের অর্থ এবং ধর্মীয় কাজে দেশে আগত বৈদেশিক সহায়তা আত্মসাৎ বা স্থানান্তর করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতেই সোমবার (২৪ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধান টিম প্রধান ও সংস্থাটির পরিচালক মো. আকতার হোসেন আজাদের সই করা চিঠি পাঠানো হয়েছে।

যে নেতাদের তথ্য-উপাত্ত জানতে চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী, হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর শাখার সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের সদ্য সাবেক সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হক, সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, সাবেক অর্থ সম্পাদক মাওলানা মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, সাবেক সদস্য মাওলানা নুর হোসাইন নুরানী, ঢাকা মহানগরের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, সাবেক সহকারী অর্থ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, সাবেক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মাওলানা হারুন ইজাহার, সাবেক সহকারী আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব আহমেদ।

এছাড়া হেফাজতের সক্রিয় সমর্থক মো. আহম্মেদ কাশেমী, সাবেক সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা কামরুল ইসলাম কাসেমী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামবাদী, মাওলানা এরশাদ উল্লাহ কাশেমী, হেফাজত সমর্থক হাফেজ মাওলানা জুনাইন কাসেমী ও মাওলানা মো. মোহসিন মিয়া, জামিয়া ইউনুছিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষা সচিব মুফতি আদুর রহিম কাসেমী, হেফাজতে ইসলামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া নোমান কাসেমী, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা নাসির উদ্দিন মনির, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা জালাল উদ্দিন, সমর্থক মাহমুদুল হাসান শুনবী (ফেনী) ও আলী হাসান উসামা, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন মনির (হাটহাজারি), সাবেক সহ-অর্থ সম্পাদক আহসান উল্লাহ মাস্টার, হাটহাজারী পৌর হেফাজতে ইসলামের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল্লাহ অসাদ, সাবেক সহকারী প্রচার সম্পাদক গাজী ইয়াকুব ওসমানী (কসবা), সাবেক সহকারী মহাসচিব ফজলুল করিম কাসেমী, ঢাকা মহানগর হেফাজতের সাবেক সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা এহসানুল হক, সাবেক সহকারী মহাসচিব ও রাবেতাতুল ওয়ায়েজিনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাসান জামিল, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি খলিলুর রহমান মাদানি, জামিয়া ইসলামিয়া হালিমিয়া মধুপুর মাদরাসার শিক্ষক আবু আম্মার আব্দুল্লাহ (মধুপুরী পীরের ছেলে), ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী, জামিয়া ইসলামিয়া হলিমিয়া মধুপুর মাদরাসার নায়েবে মুহতামীম ওবায়দুল্লাহ কাসেমী, হেফাজতে ইসলামের সাবেক সভাপতি ও বেফাক ঢাকার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, হেফাজতে ইসলামের সাবেক সহকারী মহাসচিব মুফতি আজাহারুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি মাওলানা ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, মুফতি ফজলুল হক আমীনির নাতি মাওলানা আশরাফ মাহাদী, দারুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মোহাম্মদুল্লাহ জামী, মুহতামিম বাহিরদিয়া মাদরাসার সভাপতি মাওলানা শাহ আকরাম আলী এবং মুহতামিম শামসুল উলুম মাদরাসার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতি কামরুজ্জামান।

তালিকায় আরও আছেন- হেফাজতে ইসলামের সাবেক সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইসহাক, সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদ্রিস, সাবেক সদস্য মাওলানা মুফতি কেফায়েত উল্লাহ, সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক ইনামুল হাসান ফারুকী, জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা মুহাসিনুল করিম, হেফাজত সমর্থক মাওলানা জয়নাল আবেদীন বকাইলী, সাবেক সহকারী মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাছেমী এবং হেফাজতে ইসলামের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সামছুল ইসলাম জিলানী।

এ বিষয়ে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক বলেন, হেফাজতের নেতাদের বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটি বিষয়টি দেখছে। তারা তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করবে। তারপর যেসব অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে আসবে সেগুলোর তদন্ত হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদকের গোয়েন্দারা যাচাই-বাছাইয়ে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পান। এরপর কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।