জাতীয়

দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে দক্ষিণাঞ্চলে


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

বিদ্যুৎকে দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তার সরকার দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করবে। রূপপুরের কাজ শেষ হলে আরও একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করার ইচ্ছার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দক্ষিণাঞ্চলে জায়গা খুঁজছি। দক্ষিণে শক্ত মাটিওয়ালা জায়গা পাওয়া খুব কঠিন। তার পরও বিভিন্ন জায়গায় আমরা সার্ভে করছি। যদি আরেকটা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট করতে পারি, তা হলে বিদ্যুতের জন্য আর কোনো অসুবিধা আমাদের হবে না। এর পরও আমরা বহুমুখী বিদ্যুৎ উৎপাদন করে যাচ্ছি এ জন্য যে বিদ্যুৎ সুবিধাটা মানুষ যেন পায়, এটা যেন অব্যাহত থাকে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে যেন আর কখনো পিছিয়ে পড়তে না হয়, এ দেশের ওপর আর কখনো যেন কোনো শকুনির থাবা না পড়ে। সে জন্য সরকার বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে

গতকাল রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল বা পরমাণু চুল্লিপাত্র স্থাপনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল হলো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল যন্ত্র। এর ভেতরেই ইউরেনিয়াম থেকে শক্তি উৎপাদন হবে, যা কাজে লাগিয়ে তৈরি হবে বিদ্যুৎ। ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুরে পরমাণু চুল্লির জন্য প্রথম ইউনিটের কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের উদ্বোধন করেছিলেন। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল নির্মাণকাজ। এবার সেখানে রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল বসানোর মধ্য দিয়ে স্বপ্নপূরণের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। পরমাণু শক্তি আমরা শান্তির জন্য ব্যবহার করছি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা হয়েছিল। সেখানে আমার কতগুলো প্রশ্ন ছিল, আমরা এটি করার পর এর নিরাপত্তা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। কারণ বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ, এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করাটা সম্ভব নয়। আমাদের যে চুক্তি হয়, তাতে এটাও নিশ্চিত করা হয়, এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সব সময় রাশিয়া নিজেই করবে। সেই বিষয়গুলো আমরা নিশ্চিত করি।

অনেকে না জেনে সমালোচনা করেন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বাংলাদেশে একটা কিছু করতে গেলে এত সমালোচনা, এত সমালোচনা হয়। নানাভাবে নানা জনে, কেউ বুঝে না বুঝে অনেক কথা বলে ফেলে, অনেক কথা লিখে ফেলে। টকশোতে অনেক কথা- এটা হচ্ছে বাংলাদেশের নিয়ম।

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ফলে বাংলাদেশের নিজস্ব দক্ষ জনবলও তৈরি হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে যারা বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী বা যারা নিউক্লিয়ার বিষয়ে কাজ করেন, সবারই একটা অভিজ্ঞতা হলো। তাদের ট্রেনিং করাতে হচ্ছে। তাদের রাশিয়া ও ইন্ডিয়াতে ট্রেনিং করাচ্ছি।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আইএইএর সঙ্গে চুক্তি সই, বাংলাদেশ অ্যাটমিক অ্যানার্জি কমিশন গঠনসহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর এই উদ্যোগ থেমে যায়। যদি জাতির পিতা বেঁচে থাকতেন, তা হলে এটা আমরা আরও অনেক আগে করতে পারতাম।

বাংলাদেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে রুশ সহায়তায়। দেশটির রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ, এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লোশকিন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান রূপপুরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।