চট্টগ্রাম

পটিয়া মেগাপ্রকল্পের স্বপ্নযাত্রা


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের ক্ষত কাটিয়ে টেন্ডারে গেল পটিয়া জলাবদ্ধতারোধ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প। ইতিমধ্যেই চারটি প্যাকেজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। পাউবো প্রকৌশলীরা জানান, করোনাকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা কার্যালয়ের কার্যক্রম সীমিত ও ডিজাইন প্রস্তুতকরণে ধীরগতির কারণে টেন্ডার-প্রক্রিয়া কিছুটা দেরি হচ্ছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মেরিন ড্রাইভের আদলে সুরক্ষিত হবে পটিয়া। বন্যা রোধ ও জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে ১২ ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ। এছাড়াও চাষাবাদের আওতায় আসবে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, ‘চার প্যাকেজে ৫৮ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে টেন্ডার খোলা হবে।’ গত ৪ এপ্রিল একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। ব্যয় ধরা হয়েছে ১১শ কোটি ৫৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।  পটিয়া আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হচ্ছে। একইভাবে নির্ধারিত মেয়াদকালের মধ্যে শেষ করতে হবে। এজন্য মূল ঠিকাদার যাতে প্রকল্পের কাজ করে, সেই অনুরোধ থাকবে। উপ-ঠিকাদার কাজ করলে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। অনেক সময় মাঝখানে কাজ পেলে ঠিকাদার পালিয়ে যায়। কাজ আর এগোয় না।’

সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, কাজের গুনগত মান বজায় রাখা ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে স্থানীয় কিছু স্বেচ্ছাসেবী প্রকৌশলী এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে। যাতে কাজ দ্রুত এগিয়ে যায়। কারণ প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পর পুরো পটিয়া সুরক্ষিত হবে। এবং এই বেড়িবাঁধের উপর এলজিইডি বিভাগের মাধ্যমে পাকা সড়কে রূপান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রকল্পটি একনেক সভায় পাস হওয়ার পর থেকে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়। প্রকল্পের ডিজাইন প্রস্তুত থেকে শুরু করে অন্যান্য কাজে শম্ভুক গতি দেখা দেয়। তারপরও স্থানীয় সাংসদের দৌড়ঝাঁপে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, চারটি প্যাকেজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ইজিপি’র মাধ্যমে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে, ভেল্লাপাড়া সেতু এলাকা ৭শ মিটার ও বোয়ালখালী খালে দুই শ’ মিটার অংশে ব্লক বসানো। কালিগঞ্জ সেতু থেকে চান্দখালী খাল সংলগ্ন এলাকায় নয় দশমিক ৭ মিটার ও গরু লুটার খালে তিন শ’ মিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়।

প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি ও লকডাউনের কারণে ঢাকা অফিসের কার্যক্রম সীমিত করার কারণে প্রকল্পের ডিজাউন প্রস্তুতে কিছুটা দেরি হয়। সংক্রমণ কাটিয়ে অনেকটা দ্রুততার সঙ্গে প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

প্রকল্পটি পটিয়ার উপজেলার জন্য বড় প্রকল্প। বিশাল এলাকাজুড়ে কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবে এই প্রকল্পে।

পটিয়া আসনের সাংসদ ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (২০২৪ সালের জুন মাস) কাজ শেষ করার জন্য প্রচেষ্টা থাকবে। এজন্য বাঁধ নির্মাণ, রেগুলেটর, প্রতিরক্ষা বাঁধ ও অন্যান্য কাজ একই সঙ্গে শুরু করার জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে অনুরোধ করেছি। যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পটিয়া পৌরসভাসহ আশিয়া, হাবিলাশদ্বীপ, ধলঘাট, বড়লিয়া, দক্ষিণ ভূর্ষি, জঙ্গলখাইন, নাইখাইন, ভাটিখাইন, ছনহরা কচুয়াই, হাইদগাঁও, কেলিশহরসহ ১২ ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবে।

প্রকল্পে ২৫ দশমিক ৫১০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হবে। ১১টি খালের ৩০ দশমিক ২০০ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হবে। দুই দশমিক ৯৫০ কিলোমিটার নদী-খালের তীর সংরক্ষণ করা হবে। প্রকল্পে ২৬টি খালে রেগুলেটর বসানো হবে। চার দশমিক ১০০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ করা হবে। খানমোহনা এবং ধলঘাট স্টেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য চাঁদখালী খালের উপর একটি সেতু নির্মাণ করা হবে।