জাতীয় স্বাস্থ্য

প্রবাসীদের মাধ্যমে দেশে এইডস ছড়াচ্ছে


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

বিদেশ থেকে এইচআইভি বা এইডসে আক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরে অনেক প্রবাসীরা বিয়ে করার পর স্ত্রীকেও আক্রান্ত করছেন। এর ফলে যে শিশুর জন্ম হচ্ছে সেও এইডসে আক্রন্ত হচ্ছে বলে ​জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এসব প্রবাসীদের অনেকেই জানতেন না যে তারা এইডসে আক্রান্ত ছিলেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘স্যামপল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২০’ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে ৭২৯ জনের দেহে এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী ১৮৬ জন। তাদের নিয়ে বর্তমানে দেশে এইচআইভি আক্রান্ত সম্ভাব্য রোগীর সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি।

এছাড়া গত এক বছরে দেশে মায়ের কাছ থেকে সংক্রমিত হওয়া এইডস রোগী বেড়েছে প্রায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ। একইসঙ্গে এইডস সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি বাড়ছে নারীদের মধ্যে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও টিবি-লেপ্রোসী ও এইডস/এসটিডি প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. খুরশীদ আলম বলেন, দেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার মাত্র ০ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। তবে সংক্রমণের হার কম হলেও ঘনবসতি, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন এবং অসচেতনতার কারণে এইচআইভির ঝুঁকি রয়েছে। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমারসহ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় এইচআইভি সংক্রমণের হার অনেক বেশি হওয়ায় দেশের ঝুঁকি রয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালের পর থেকে করোনার কারণে বৈধ এবং অবৈধ পথে বিদেশ যাওয়া অনেকেই দেশে ফিরেছেন। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, সরকারি তথ্য মতে, নতুন শনাক্ত হওয়া এইডস রোগীদের মধ্যে অভিবাসী কর্মীর সংখ্যা বেশি। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও সংক্রমণের হার বেশি। কিন্তু এই সময়ে করোনা এবং হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতের প্রতিই সরকারের মনোযোগ ছিল। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, পরীক্ষার বাইরে কিছু জনগোষ্ঠী রয়ে গেছে।

এছাড়াও কয়েক বছর ধরেই দেখা গেছে, অভিবাসীদের অনেকেই এইচআইভি আক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরছেন। প্রসঙ্গত, পরিসংখ্যান মতে, এই সময়ের জরিপে এইচআইভিতে আক্রান্ত নতুন রোগীদের ৩০ শতাংশ অভিবাসী কর্মী বা তার পরিবারের সদস্য।

মায়েদের সংক্রমণের হার বেশি হওয়ার প্রসঙ্গে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল কবির বলেন, প্রবাসীদের যখন এইডস হয়, তখন তারা নিজেরও জানে না। বেশির ভাগ প্রবাসীই বিদেশ থেকে এসে বিয়ে করে বা সন্তান নেয়। সেখান থেকেই মায়েদের এবং সন্তানের শরীরে যায়। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত ব্যাখ্যা। এটা আমার নিজের চোখে দেখা।

তিনি বলেন, এইডস বেশির ভাগ থাকে মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া ও ইতালিতে। বেশিরভাগ মানুষই জানে না তাদের এইডস হয়েছে। জানলেও বিভিন্ন কারণে গোপন রাখেন। এইডস দুইভাবে ছড়ায়, শারীরিক মিলন ও রক্তের মাধ্যমে। দেশে এতদিন পর্যন্ত যতজন নারী আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের কেউই সরাসরি হননি। প্রত্যেকেই আক্রান্ত হয়েছে শারীরিক মিলনের মাধ্যমে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সাল নাগাদ এইডস আক্রান্ত ৯৫ শতাংশ রোগীকে চিকিৎসার আওতায় আনা হবে। তবে প্রাণঘাতী এই রোগ নিরাময়ে সরকারের আরও বেশি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে এইডস শনাক্তকরণ পরীক্ষার সংখ্যা এবং আওতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, অভিবাসী, পুসব্যাক হওয়া জনগণ এবং বেশি আক্রান্ত পাওয়া এলাকাগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে।