প্রধান পাতা

ফরেন বডি দিয়ে বিকৃত যৌনাচার করা হয়েছিলো আনুশকাকে


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

ফেসবুক পেজ ও নানা নামে ওয়েবসাইট চালু করে সেক্স টয়ের বিজ্ঞাপন দিত চক্রটি। বিজ্ঞাপন দেখে ক্রেতারা আকৃষ্ট হলে তাদের কাছে উচ্চমূল্যে এসব সেক্স টয় বিক্রি করত চক্রটির সদস্যরা। তাদের টার্গেট ছিল ত্রিশোর্ধ্ব গ্রুপ। তাছাড়া একাকী জীবন যাপন করছে এমন লোকজনও তাদের টার্গেট।

সুনির্দিষ্ট এসব অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর পল্লবী থেকে সেক্স টয় বিক্রেতা চক্রের মূল হোতাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম। গ্রেপ্তাররা হলেন- রেজাউল আমিন হৃদয় (২৭), মীর হিসামউদ্দিন বায়েজিদ (৩৮), মো.সিয়াম আহমেদ ওরফে রবিন (২১), মো. ইউনুস আলী (৩০), আরজু ইসলাম জিম (২২) ও চক্রের মূল হোতা মো. মেহেদী হাসান ভূইয়া ওরফে সানি (২৮)।

গ্রেপ্তারের পর চক্রটির কাছ থেকে ১২ লাখ টাকার সেক্স টয়, ৫টি মোবাইল ফোন, ১টি ল্যাপটপ ও ৯টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ৬ জনের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি মামলা করা হয়েছে।

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগস্থ সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান।

তিনি বলেন, ধর্ষণের ফলে গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী আনুশকা নুর আমিন নামে এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে জানা যায়, বিকৃত যৌনাচারের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায় সে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই ছাত্রীকে নির্যাতনের সময় এক ধরনের ফরেন বডি ব্যবহার করা হয়েছিল। ওই ছাত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

মো.কামরুল আহসান বলেন, বিষয়টি সিআইডির সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম এর নজরে আসে। তারা এ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে দেশে নিষিদ্ধ যৌন উদ্দীপক বিভিন্ন পণ্যের ছবি এবং ভিডিওসহ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম এ ধরনের কয়েকটি ওয়েবসাইট ফেসবুক পেজকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

ওয়েবসাইটগুলো হচ্ছে- টিভিসি স্কাই শপ বিডি, স্কাই শপ বিডি, টিভিসি স্কাই শপ ও এশিয়ান স্কাই শপ আই। এসব ওয়েবসাইট ও পেজগুলো সম্পর্কে নিবিড় অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডির সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম। অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব পণ্য বিক্রির আর্থিক লেনদেন হয় বিকাশ ও রকেটে। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, সংঘবদ্ধ চক্রটি বিদেশ থেকে অবৈধ পণ্য আমদানির আড়ালে এসব নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশ নিয়ে আসছে। পরবর্তীতে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে।

সেক্স টয়ের বাজারমূল্য জানতে চাইলে সিআইডির কর্মকর্তা জানান, ১২ লাখ টাকার অবৈধ সেক্স টয় উদ্ধার করেছি। কিন্তু এগুলোর প্রকৃত মূল্য এর অর্ধেকও না। ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে এসব পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলছে। যেমন লাইকি, টিকটক ব্যবহার করে একটি ক্লোজড গ্রুপ তৈরি করে, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ডিজে পার্টির আড়ালে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চলছিল।

দারাজ এসব সেক্স টয় খোলামেলাভাবে বিক্রি করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত মাত্র শুরু করেছি। ওয়েবসাইটে যারা এসব বিক্রি করছে তাদের ফুটপ্রিন্ট আছে। এ বিষয়গুলো আমরা ধরে ধরে কাজ করবো।

টার্গেট কারা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই চক্রের কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে। ওই ওয়েবসাইটে যে কেউ প্রবেশ করলেই প্রলুব্ধ হয়ে যাবে। তবে তারা বিশেষত ত্রিশোর্ধ্ব একটি গ্রুপকে টার্গেট করে এসব নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি করত। তাছাড়া একাকীত্ব জীবন যাপন করছে যারা তারাও টার্গেট চক্রটির।

আমদানি নিষিদ্ধ এসব পণ্য দেশে আসার ক্ষেত্রে কাস্টমসের দায়ভার এড়াতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে অনুসন্ধান মাত্র শুরু করেছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে।

ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর শরীরে ফরেন বডির উপস্থিতি সম্পর্কে কিভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিএনএ টেস্ট এখনো চলছে এবং ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এখনও আসেনি। আমরা এতটুকুই জানি। তবে ঘটনার পর ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন, ওই শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করার সময় ফরেন বডির উপস্থিতি ছিল। আরে তাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং পরে সে মারা গেছে।