জাতীয়

বঙ্গবন্ধুকে ‘ছোট’ করছে আওয়ামী লীগ: জি এম কাদের


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আওয়ামী লীগ দলের গণ্ডিতে আবদ্ধ রাখতে চাইছে বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান কোনো একটি দলের নয়, তিনি বাঙালি জাতির সম্পদ। বঙ্গবন্ধুকে দলীয় সম্পদ করতে চেয়ে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুকে ছোট করছে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রোববার (১৫ আগস্ট) জাতীয় পার্টির আলোচনা সভায় একথা বলেন কাদের।

বঙ্গবন্ধুর প্রশস্তি গেয়ে সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা কাদের বলেন, তিনি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী। কারণ, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি জাতির সকল ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। একই সময়ে দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিলেন তিনি। ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর মতো নেতৃত্ব বিরল। তাই, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে জাতির কোনো দ্বিমত নেই।

জি এম কাদের দাবি করেন, তার ভাই এইচ এম এরশাদ রাষ্ট্রপতি থাকার সময় বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতার স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিলেন। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মহান জাতীয় সংসদে বক্তৃতায় বলেছিলেন, জাতীয় পার্টি বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনকের স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কিছু বাধার কারণে তা করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন। বঙ্গবন্ধুও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে খুব স্নেহ করতেন। ১৯৭৫ সালের পর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আগ পর্যন্ত পাঁচজন রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। কিন্তু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করেছিলেন।

আলোচনায় সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যায় রাজনৈতিক নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়টি উদ্ঘাটন করতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।”

পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগ নেতাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এক সময়ের এই বাসদ নেতা। বলেন, সেদিন কোনো এমপি, জেলা গভর্নর ও আওয়ামী লীগের নেতারা রাজপথে নেমে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেননি। বাকশালের নেতারাই খন্দকার মোশতাক আহমেদের সরকারে ছিলেন। তারাই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভার সদস্যরা পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের টিকেটে এমপি হয়েছেন, এর চেয়ে লজ্জার বিষয় আর হতে পারে না।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বাবলু বলেন, যারা মানুষের বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করেছেন, তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। যারা দেশে দুর্নীতি ও দুঃশাসন চালায়, তারা কখনোই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে না।

সভায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ভয়াবহ রাতে কেউই নিজ দায়িত্ব পালন করেননি। বঙ্গবন্ধুকে রক্ষায় কোনো বাহিনী প্রতিরোধ গড়তে এগিয়ে আসেনি।

ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা বলেন, যখন বাকশাল গঠন করা হয়, তখন ঘরে ঘরে আওয়ামী লীগ। কিন্তু, ১৫ অগাস্টের দিন আওয়ামী লীগের কোনো নেতা, বুদ্ধিজীবী বা বাকশাল খুঁজে পাওয়া যায়নি। কেউ একটি বিবৃতি দেয়নি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে।

ঢাকার বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে ওই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আব্দুস সাত্তার মিয়া।