জাতীয়

বিদ্যালয়ে উপস্থিত ২ জন শিক্ষার্থী, তিনজন শিক্ষক


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের করিরতাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন পাঁচজন। কাগজে-কলমে তারা ১২০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ান। তবে সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে মাত্র দুজন শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে। এ সময় শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন তিনজন। 

গত রোববার করিরতাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে সাংবাদিক দেখে হকচকিয়ে ওঠেন প্রধান শিক্ষক শামীমা খান ও সহকারী শিক্ষক সোহরাব আলী। পরে আসেন সহকারী শিক্ষক আব্দুর রৌফ আকন্দ। তারা সাংবাদিকদের নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন।আর বিদ্যালয়ের বাকি দুজন শিক্ষক এদিন অনুপস্থিত ছিলেন।

বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ঢুকে দেখা যায়, চতুর্থ শ্রেণির কক্ষে মিতানুর আক্তার ও পঞ্চম শ্রেণির কক্ষে শাকির হোসেন বসে আছে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আজ শুধু তারা দুজনই বিদ্যালয়ে এসেছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতায় দেখা যায়- প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে নয়জন, প্রথম শ্রেণিতে ২১ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২১ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১৯ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৭ জন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ২৩ জন ছাত্র-ছাত্রীর নাম লেখা রয়েছে। তবে রোববার কোনো হাজিরা দেখানো হয়নি।

আশরাফ হোসেন নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,  ‘কাজীর গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নেই- এমন অবস্থা করিরতাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। খাতায় ছাত্র-ছাত্রীর নাম আছে শুধু, ক্লাসে নাই। সরকার প্রতি মাসে শিক্ষকদের লাখ লাখ টাকা বেতন দিচ্ছে, অথচ আমগো পোলাপানের লেখাপড়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা খান বলেন , ‘পাশে একটি মাদ্রাসা থাকায় স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী কমে গেছে। এ ছাড়া করোনার পর থেকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী আসছে না।’

ইসলামপুর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও ওই বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুল গফুর খানের সঙ্গে দুই দিন চেষ্টার পর তাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়।শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ম্যানুয়ালি শিক্ষকদের হোম ভিজিট করার কথা রয়েছে।’

আজ মঙ্গবার দুপুরে ইসলামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়মুখী করতে ওই ক্লাস্টারের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির মনিটরিং ও কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করার দায়িত্ব রয়েছে। শিক্ষকরা হোম ভিজিট করছেন কি না, ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসবে কি না এ ব্যাপারে কোনো প্রতিবেদন এখন পর্যন্ত আমার কা উপস্থাপন করেননি সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা।’

ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মু. তানভীর হাসান রুমান আজ মঙ্গলবার আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম, তবে খুবই দুঃখজনক। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’