জাতীয়

বিশিষ্টজনদের সঙ্গে ইসির সংলাপ আজ, অনেকের আসতে অনীহা


Warning: strlen() expects parameter 1 to be string, array given in /home/khalinews/public_html/wp-includes/functions.php on line 262
(Last Updated On: )

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) দ্বিতীয় দফায় মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে বসছে। কমিশন আজকের সংলাপে মোট ৩৯ বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও রাশেদা কে. চৌধূরী বিদেশে থাকায় ৩৭ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে পেশাজীবী ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসছে ইসি। এর আগে ইসি প্রথম দফায় গত ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপে বসে। এতে ৩০ শিক্ষাবিদকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও উপস্থিত ছিলেন ১৩ জন। এত কম উপস্থিতি কমিশনের প্রতি আস্থার সংকটের কারণে কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে।

আজ অনুষ্ঠেয় সংলাপে আমন্ত্রিত ৩৭ জনের মধ্যে দেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে সোচ্চার এমন বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম রয়েছে। তাঁদের কয়েকজন বলেন, তাঁরা এই সংলাপে উপস্থিত থাকতে পারবেন না।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘আমি অসুস্থ। এ কারণে সংলাপে অংশ নেওয়া সম্ভব হবে না। তা ছাড়া আগের কমিশন আয়োজিত সংলাপে আমরা যেসব প্রস্তাব রেখেছিলাম, তা আমলে নেওয়া হয়নি। এবারও নেওয়া হবে—এমন আস্থার জায়গা নতুন ইসি এখনো তৈরি করতে পারেনি। মনে হচ্ছে, এ সংলাপ অর্থহীন। ’

নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, তিনি চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। এ কারণে ইসির সংলাপে যোগ দিতে পারছেন না।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সংলাপের সময় আমাকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির জন্য খুলনায় অবস্থান করতে হবে। ’

ইসির উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই ইসিকে আস্থার সংকট দূর করতে হলে প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে অতীতে যেসব অন্যায়-অনিয়ম হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। আসন্ন কোনো নির্বাচনে নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করে ভোটারদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। নিজেদের ভাবমূর্তিসংকট দূর করে, প্রয়োজনীয় হোমওয়ার্ক সেরে তারপর এ ধরনের সংলাপের আয়োজন করা হলে সুফল মিলতে পারে। ’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট এক নাগরিক বলেন, ‘শুনেছি, প্রায় ৪০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এঁদের ব্যাকগ্রাউন্ডও ভিন্ন। সবাই কথা বলতে চাইলে দুই থেকে আড়াই মিনিট করে সময় পাবেন। এত কম সময়ে দেশের নির্বাচনব্যবস্থার গলদ নিয়ে কী কথা বলব? তা ছাড়া ইসি তো কোনো এজেন্ডা ছাড়াই এই সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে। ’

তবে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্যে সংলাপে যোগ দিচ্ছেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, সংলাপে অংশ নিয়ে নির্বাচন নিয়ে নাগরিক ভাবনার বিষয়গুলো তুলে ধরবেন তাঁরা।

সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, ‘আমি যাচ্ছি। নির্বাচন নিয়ে দেশের নাগরিকদের যেসব চিন্তা-ভাবনা, তা তুলে ধরার চেষ্টা করব। ’

মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, ‘সংলাপে অংশ নিয়ে কী বলব, তাতে কী লাভ হবে, সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু আমন্ত্রণ যেহেতু পেয়েছি, আমি যাব। ’

আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের তালিকায় আরো রয়েছেন হোসেন জিল্লুর রহমান, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া এ রহমান, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক, অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ওয়ালি উর রহমান, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ইনডিজিনিয়াস পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, সাবেক রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গোলাম হোসেন, অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান, সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মণ্ডল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, প্রেসিডেন্ট গভর্ন্যান্স অ্যান্ড রাইট সেন্টারের জহুরুল আলম, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক বেগম শাহীন আনাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মহসিন, অধ্যাপক কাবেরী গায়েন, অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক এস এম শামীম রেজা, অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান, মোস্তাফিজুর রহমান, লিডারশিপ স্টাডিজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিনহা এম এ সাঈদ এবং লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ।